প্রকাশ: সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪, ৭:২০ পিএম (ভিজিট : ২৯৪)
উপকূল অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। রেখে গেছে তার তাণ্ডবের ছাপ। টানা ২৪ ঘণ্টায় লন্ডভন্ড করে দিয়েছে পুরো পটুয়াখালী জেলাকে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়ার সাথে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। জোয়ারের পানিতে ভেসে গিয়ে ও গাছ চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন ৩ জন। বিধ্বস্ত হয়েছে প্রায় ৪ হাজার ঘরবাড়ি। উপড়ে পড়েছে কয়েক হাজার।
জানা গেছে, লাইন ছিঁড়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অনেক এলাকা। নেই মোবাইল নেটওয়ার্ক। ফলে দুর্গম এলাকায় বসবাসকারীদের খবর জানা যাচ্ছেনা। বিভিন্ন নদনদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। ২০ থেকে ২৫টি পয়েন্টে মোট ২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্ত হয়েছে। এছাড়া তিন দফা জোয়ারে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। বেড়িবাঁধের ভেতরে ও বাইরে প্রায় ২৫ হাজার পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। জোয়ার ও অতিবৃষ্টির পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে মাছের ঘের ফসলের মাঠ। ভাটার সময় পানি কিছুটা কমলেও বিপদ সীমার কাছাকাছি অবস্থান করায় মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকছে না।
অকার্যকর শহর রক্ষা বাঁধ ও বেড়িবাঁধ উপচে পানিতে প্লাবিত হয়েছে জেলা সদরের অধিকাংশ এলাকা। এলাকাবাসী বলছেন, সুপার সাইক্লোন সিডরের থেকেও বেশি পানি উঠেছে এই ঘূর্ণিঝড়ে কোথাও হাঁটু সমান কোথাও কোমর সমান পানি উঠেছে। অপেক্ষাকৃত নিচু ঘরগুলো পানিতে প্লাবিত হওয়ায় পরিবারের সকল সদস্যরা চৌকি অথবা অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মালামাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার হয়েছেন ব্যবসায়ীরা। দোকানও গুদামে পানি ঢুকে মালামাল নষ্ট হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন জানান, অনেকগুলো স্থানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত ও বিধ্বস্ত হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মত স্থানীয়দের সহায়তা নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানগুলো মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন দেবনাথ জানান, অন্যান্য ঘূর্ণিঝড়ের চেয়ে রিমালের আঘাতে পটুয়াখালী জেলায় অনেক বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় সব জায়গার সঠিক খবর পাওয়া যাচ্ছেনা। এখনও বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার মানুষ অবস্থান করছে।
সময়ের আলো/আরআই