ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বান্দরবানে বইছে ঝড়ো বাতাস, ২১৪ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত
প্রকাশ: সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪, ৫:৪১ পিএম  (ভিজিট : ৫০২)
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে বান্দরবানেও সকাল থেকে শুরু হয়েছে থেমে থেমে ভারি ও হালকা বৃষ্টিপাত। বান্দরবানের টানা ১১ ঘণ্টা এই বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে রিমাল মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন, পৌরসভা ও ফায়ার সার্ভিস এর পক্ষ থেকে জেলার বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। তাছাড়াও বান্দরবান সদর ছাড়াও ৬টি উপজেলায় পাহাড়ের চূড়া, পাদদেশ ও কোলঘেষে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসরত লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরে যেতে ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে মাইকিং হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত বান্দরবানে কোথাও তেমনভাবে কোনো বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলা শহরের বনরুপা, লাঙ্গি পাড়া, কালাঘাটা, বালাঘাটাসহ বিভিন্ন স্থানে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে পাহাড়ের পাদদেশে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন অধিকাংশ মানুষ। এর আগে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড় কিংবা অতিবৃষ্টি প্রভাবে পাহাড়ে মাটি নরম হয়ে পাহাড় ধ্বসে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।  

সূত্রে আরও জানা যায়, গত বছরের জেলা বান্দরবানে ভারী বন্যায় পাহাড় ধ্বসে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০ জন। গত বছরের মত যাতেই প্রাণ হারাতে না হয় তার আগে সরিয়ে যেতে মাইকিং করছে প্রশাসন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসরত মানুষকে বারবার সরিয়ে যেতে মাইকিং ও সতর্ক জারী করা হলেও অধিকাংশ মানুষ তা আমলে নিচ্ছে না। 

পাহাড়ে পাদদেশে বেশ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, তারা অত্যন্ত নিম্ন আয়ের মানুষজন বসবাস করে থাকে। দীর্ঘদিন থেকেই ঝুঁকি জেনেও বাধ্য হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে পাহাড়ের এমন স্থানে তাদের বসবাস করতে হচ্ছে। এছাড়া তাদের কোনো উপায়ও নেই। এমনকি বসতভিটা ছেড়ে নতুন কোথাও যে আশ্রয় হবে সেই ভরসাও নেই তাদের। একটু বৃষ্টি হলেই আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। তাছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রে গেলে, যদি তাদের জান রক্ষা হলেও বাড়ি জিনিসপত্র হারানো ভয়ে বসতভিটা ছাড়তে তারা রাজি নয়। 

প্রশাসন জানিয়েছেন, রিমাল ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বান্দরবানের সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে প্রশাসন। জেলার ৭ উপজেলায় ২১৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও শুকনা খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ফায়ার সার্ভিস, রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবক টিমের কুইক রেসপন্সসহ সাতটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা এবং মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তর তথ্য মতে, রিমাল ঘূর্ণিঝড়ের বান্দরবানে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রামসহ পার্বত্য এলাকায় ভূমিধ্বসে সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়া বান্দরবানে টানা ১১ ঘণ্টা বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।

জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সনাতন মন্ডল সময় আলোকে জানান, বান্দরবানে সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে থেমে থেমে টানা ১১ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সেই সাথে বৃষ্টির পাশাপাশি হালকা ঝড়ো বাতাস বইবে পারে। তবে পাহাড়ে যারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছেন সেখানে পাহাড় ধ্বসে আশঙ্কা রয়েছে।

বান্দরবান পৌরসভার মেয়র সময় আলোকে বলেন, জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে আমরা মাঠে কাজ করছি। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবেলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ও স্বাস্থ্য বিভাগকে সর্বোচ্চ আগাম প্রস্তুতি নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অতিবৃষ্টির কারণে পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাবার জন্য সচেতনতা মূলক মাইকিং করতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং জেলা তথ্য অফিসারকে সব ধরণের নির্দেশন প্রদান করেছি।

সময়ের আলো/আরআই



আরও সংবাদ   বিষয়:  ঝড়ো বাতাস   আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত   বান্দরবান  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close