মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ব্যালট পেপারে ১৪ প্রতীক থাকলেও ভোটের মাঠে লড়ছেন ১০ প্রার্থী। প্রতীক বরাদ্দের পর মাঠে দেখা যায়নি চার প্রার্থীকে। এর মধ্যে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন তারা। আনুষ্ঠানিক প্রার্থী প্রত্যাহারের সুযোগ না থাকায় এখন নিজ থেকে সরে গেলেও ব্যালটে থাকবে প্রতীক। মাঠ থেকে সরে যাওয়াদের মধ্যে রয়েছেন তিনজন চেয়ারম্যান ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী।
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ২য় ধাপে ২১ মে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর চেয়ারম্যান পদে আটজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজনকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রথমে সবাই প্রচার শুরু করলেও শেষ পর্যন্ত চারজন মৌখিকভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। প্রচারের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোতে প্রার্থীদের নিয়ে উপজেলাজুড়েই চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এ সব প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে সরে যাওয়ায় তাদের কর্মী সমর্থকরা অন্য প্রার্থীদের কাছে চলে যাওয়ায় ভোটের মাঠে দেখা দিয়েছে নতুন মোড়।
প্রথমে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ শাহিদুজ্জামান খোকনের সহধর্মিণী লাইলা আরজুমান বানু শিলা। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত কারণেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি, রাজনৈতিক কোনো চাপে নয়। পরবর্তীতে রাজনীতি করার স্বার্থেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার প্রতীক ছিল দোয়াত-কলম।
চেয়ারম্যান প্রার্থী গাংনী উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, কোনো চাপে বা প্রভাবিত না হয়ে পারিবারিক রাজনৈতিক কারণেই নির্বাচন থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছি। তার প্রতীক ছিল মোটরসাইকেল।
অপর প্রার্থী অ্যাডভোকেট একেএম শফিকুল আলম বলেন, ভোটের লড়াই ও সিন্ডিকেটের (ইউপি চেয়ারম্যানদের জোট) বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকতে না পেরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। ভোট যুদ্ধ থেকে সরে গেলেও এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব বলে জানিয়ে দেন। এ প্রার্থীর প্রতীক ছিল কাপ-পিরিচ। সব শেষে ভাইস চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী রেজাউল করিম প্রতীক (চশমা) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে অপর এক প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
পর্যায়ক্রমে তিনজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার পরেই দেখা গেছে উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মধ্যে ৭ জন চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেকের (আনারস) প্রতীকের পক্ষে ভোটের মাঠে নেমেছেন।
গাংনী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক (আনারস), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান মুকুল (হেলিকপ্টার), জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (সদ্য বহিষ্কৃত) জুলফিকার আলী ভুট্টো (কই মাছ), উপজেলা পরিষদের সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রাশেদুল হক জুয়েল (ঘোড়া), মুকুল আহমেদ (দোয়েল পাখি) প্রতীক নিয়ে মোট পাঁচজন প্রার্থী গণসংযোগ করছেন।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রীতম সাহা জানান, অফিসিয়ালি কোনো প্রার্থীর বসার সুযোগ নেই। চেয়ারম্যান পদে ৮, ভাইস চেয়ারম্যান ৩ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৩ জনের জন্যই ব্যালট পেপার চলে এসেছে। এখন আমরা সব প্রতীকেরই ভোট গ্রহণ করব।
এ উপজেলায় ৯টি ইউনিয়ন, একটি পৌরসভা, ১০৭টি কেন্দ্রে ৬৫৪টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হবে। পুরুষ ১ লাখ ২৮ হাজার ৯৯৮ জন, মহিলা ১ লাখ ২৯ হাজার ৭৫৪ জন ভোটার ভোট প্রয়োগ করবেন।
সময়ের আলো/আরএস/