জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে পাঁচ শত টাকার জন্য মো. মুজাহিদ (৫) নামে এক শিশুকে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে। শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে উপজেলার সানন্দবাড়ী এলাকার পাটাধোয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। আজ (শনিবার) বিষয়টি জানাজানি হলে এর সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে পলাতক শামিম হোসেনকে (১৫) দেওয়ানগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে আটক করে পুলিশ।
মুজাহিদ ওই গ্রামের বাবুল আক্তারের ছেলে।
ঘটনার রহস্য উদঘাটনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থানে নেওয়া হলে পুলিশের কাছে মুজাহিদকে ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে অভিযুক্ত শামিম। সে পাটাধোয়া পাড়ার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
জানা গেছে, গতকাল (শুক্রবার) দুপুরে মুজাহিদ বাড়ির কাউকে না জানিয়ে গোপনে ৫০০ টাকার নোট নিয়ে বাড়ির অদূরের একটি দোকানে যায় বিস্কুট কিনতে। সে সময় শামিম তাকে দেখে পিছু নেয়। এক পর্যায়ে শামিম মুজাহিদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির নিকটবর্তী নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। মুজাহিদ কথাটা তার মাকে বলার ভয় দেখালে শামিম মুজাহিদকে নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
তখন থেকে নিখোঁজ রয়েছে মুজাহিদ। তার লাশ পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ভয়ে শামিমও আত্মগোপন করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ এলাকায় জনমুখে শামিম ও মুজাহিদের নিখোঁজের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। মুজাহিদকে না পাওয়ার বিষয়ে তার স্বজনরা শামিককে সন্দেহ করে পুলিশে জানালে পুলিশ গতকাল (শুক্রবার) রাত ১২টার দিকে দেওয়ানগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ (শনিবার) শামিমকে ঘটনাস্থলে নেওয়া হলে সে মুজাহিদকে নদীতে ধাক্কা দেওয়ার কথা স্বীকার করে।
মুজাহিদের মা সেলিনা পারভীন জানান, মুজাহিদ আমাদের একমাত্র সন্তান। সে খুব বুদ্ধিমান ছেলে। বয়সের অনুপাতে তার বুদ্ধির বিকাশ অধিক। সে কাউকে না জানিয়ে ঘর থেকে পাঁচ শত টাকার নোট নিয়ে দোকানে যায় খাবার কিছু কিনতে। সেই ছেলে আর বাড়িতে ফেরেনি। তোমরা আমার বুকের মানিকরে আমার বুকে ফিরাইয়া দাও।
মুজাহিদের বাবা বাবুল আক্তার বলেন, গতকাল (শুক্রবার) আমরা জানতাম মুজাহিদ নিখোঁজ রয়েছে। পরে শামিমের প্রতি আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত শনিবার আমাদের সেই সন্দেহই সত্যি হল। মুজাহিদের লাশ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।
মুজাহিদের নিখোঁজের সত্যতা স্বীকার করে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, শামিমকে গতকাল রাত ১২টার দিকে দেওয়ানগঞ্জ রেল স্টেশন থেকে আটক করা হয়েছে। শনিবার ঘটনাস্থলে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে মুজাহিদকে নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করে। ছোট ছেলে, সাঁতার জানেনা। ধারণা করা হচ্ছে মুজাহিদের মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হয়নি। তবে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।