ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ছায়া সংসদে দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
দুর্যোগে মৃত্যুতে আর্থিক সহায়তা যথেষ্ট নয়
প্রকাশ: শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ৫:৪৪ পিএম  (ভিজিট : ৪৪০)
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মহিববুর রহমান বলেছেন, সাম্প্রতিক তাপদাহকে দুর্যোগ হিসেবে পরিগণিত করা হয়েছে। যে কোন দুর্যোগে মৃত্যু ও হতাহতের জন্য ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান যথেষ্ট নয়, এটি বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে। এবারে হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা করা হচ্ছে। অতিমাত্রায় গরমের কারণে যারা কর্মহীন হয়েছে তাদেরকে সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। 

শনিবার (১১ মে) ঢাকার এফডিসিতে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। 

মোঃ মহিববুর রহমান বলেন, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হিট অফিসার নিয়োগের কোন পরিকল্পনা নেই। তীব্র তাপদাহে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে পানি ছিটানোর উদ্যোগ অসম্পূর্ণ। জল কামানে পানি ছিটানো যথেষ্ট নয়, এটি আরও সাইন্টিফিক ওয়েতে করতে হবে। বিল্ডিং কোড না মেনে অপ্রয়োজনীয় কাঁচের ব্যবহার ভবনে অতি তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিরাও আইন না মেনে মনমতো ঘরবাড়ি তৈরি করে  নিজের ঘরকে নিজেই মৃত্যু ফাঁদে পরিণত করছে। তাই আইন মানার জন্য প্রয়োজনে আরও কঠোর আইন করতে হবে। 

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, চলতি বছর হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সঠিক কোন হিসাব সরকারের কাছে নেই। তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যাপারেও তেমন কোন তথ্য নেই। বর্তমান বাস্তবতায় দুর্যোগজনিত কারণে মারা যাওয়া অসহায় ব্যক্তিদের পরিবারকে অন্তত ৩ লক্ষ টাকা প্রদান করা উচিৎ। প্রতি বছর অতি তাপমাত্রায় ২.৭ বিলিয়ন ডলারের উৎপাদনশীলতা নষ্ট হয়। অতিমাত্রার গরমের কারণে ২০৩০ সাল নাগাদ শুধু পোশাক খাতে ৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার কর্মীরা চাকরী হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা আশা করবো চলতি বছর আর কোন উচ্চ মাত্রার তাপদাহ তৈরি হলে সরকার তার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করবে। এবং অতিমাত্রার তাপদাহের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবে। তাপদাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য গত বছরের মে মাসে উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অধীনে একজন চীফ হিট অফিসার নিয়োগ দেয়া হয়েছে। 

এশিয়ার আর কোন দেশে হিট অফিসারের এ পদটি নেই। প্রশ্ন উঠেছে গত এক বছরে শহরের হিট কমাতে বর্তমান হিট অফিসার কি কি উদ্যোগ নিতে পেরেছেন ? তার ফলাফল কি ? তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় গত বছর বুশরা আফরিন হিট অফিসার দায়িত্ব পাওয়ার পর এ বছরই তাপমাত্রা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। তবে তাপদাহ নিয়ন্ত্রণ চীফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য দরকার রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি সকল শ্রেণি পেশার মানুষের অংশগ্রহণ। 

তিনি আরও বলেন, বড় বড় শহরগুলোতে কোথাও খেলার মাঠ নেই, পার্ক নেই, প্রাকৃতিক পানির প্রবাহ নেই, পর্যাপ্ত গাছপালা নেই, বিশুদ্ধ বাতাস নেই। আছে শুধু যানজট, ঘনবসতি, অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি, শব্দ দূষণ, বায়ু দুষণ, যত্রতত্র দোকানপাট, পার্কিং সমস্যা, ফুটপাত দখলসহ অনিয়মের আখড়া। যা তাপদাহ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। আবার আমরা যদি শহরের বাইরের দিকে তাকাই সেখানেও সামাজিক বনায়ন নেই, জলাশয় নেই, খাল দখল, নদী দখল চলছে। ফলে গ্রামেও এখন প্রকৃতির যে স্নিগ্ধতা, মুগ্ধতা আগের মতো নেই। অন্যদিকে বাংলাদেশ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক কারণে জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিল্পন্নোত দেশগুলোর খামখেয়ালিপনা, হিমালয়ের বরফ গলে যাওয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও চীনের নদীগুলো বিভিন্ন প্রকল্পের কারণে মেরে ফেলাসহ নানা বৈশ্বিক কারণে বাংলাদেশ অতিমাত্রায় তাপদাহসহ বন্যা, খরায় পর্যবশিত হচ্ছে। 

‘অসহনীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য অপরিকল্পিত নগরায়নই দায়ী’ শীর্ষক ছায়া সংসদে সরকারি তিতুমীর কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক ইফতেখার মাহমুদ, সাংবাদিক ফালগুনী রশীদ, সাংবাদিক দিপক কুমার আচার্য, সাংবাদিক আতিকুর রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। 

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিযোগিতার আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close