প্রকাশ: বুধবার, ১ মে, ২০২৪, ৬:৪৪ পিএম (ভিজিট : ৫৪০)
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের বায়রা গ্রামের দিনমজুর জামাত আলী ফকির। স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে চলে যাওয়ায় বৃদ্ধ মাকে নিয়ে বসবাস করতেন যমুনার দুর্গম চর বৃহাতকোড়া গুচ্ছ গ্রামের একটি ছোট্ট ঘরে। এলাকায় ঘোল বিক্রি এবং দিনমজুর করে চালাতেন জীবিকা। আর সেই জীবিকার তাগিদে দিনমজুর করতে গিয়ে শরীরে অসংখ্য আঘাত নিয়ে লাশ হয়ে বাড়িতে ফিরলেন জামাত আলী ফকির (৬০)।
গতকাল মঙ্গলবার (৩০এপ্রিল) সন্ধ্যায় জামাত আলী মারা গেছে বলে বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে তার রক্তাক্ত মৃতদেহ যমুনা নদীর তীরে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। পরে স্বজনরা রাতে জামাত আলীর মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে এসে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন এবং রক্তাক্ত অবস্থা দেখে কবর না দিয়ে পরদিন সকালে পুলিশে খবর দেয়।
বুধবার (১ মে) সরেজমিনে গেলে নিহত দিনমজুর জামাত আলীর বৃদ্ধ মা কমেলা খাতুন, ভাই আশরাফ ফকির এবং আজাদ ফকির জানান, জামাত আলী কিছুটা পাহলাটে স্বভাবের সহজ-সরল এবং কৃপণ প্রকৃতির ছিলেন। ৭-৮ বছর আগে জামাতের স্ত্রী ছেড়ে যাওয়ায় বৃদ্ধ মাকে নিয়ে গুচ্ছ গ্রামে থাকতেন। ঘোল বিক্রি এবং দিনমজর করে যা আয় হতো তা কারো কাছে না রেখে নিজের কোমরে বাঁধা তফিলে (থলে) রাখতেন। সেই টাকার জন্যই তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা তাদের।
তারা আরও জানান, গত শনিবার বৃহাতকোড়া গ্রামের প্রতিবেশী হানিফ এবং সাহেব আলী দূরে কোথাও দিনমজুরের জন্য ডেকে নিয়ে যায় জামাত আলীকে। এরপর গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় একটি অচেনা নাম্বার থেকে জামাতের বাড়িতে ফোন দিয়ে জানানো হয় তিনি মারা গেছেন। পরে তারা নদীর ঘাটে গিয়ে জামাত আলীর লাশ পেলেও সেখানে কাউকে খুঁজে পাননি। পরিবারের লোকজনের দাবি, প্রতিবেশী হানিফ এবং সাহেব আলীই জামাত আলীর তিল তিল করে জমানো টাকা লুট করতে হত্যা করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
এদিকে এ ঘটনার পর থেকেই বৃহাতকোড়া গ্রামের হানিফ এবং সাহেব আলী গা ঢাকা দিয়েছেন। তাদের ফোন বন্ধ বলে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি মো. খায়রুল বাশার জানান, থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। তাদের অনুসন্ধান শেষে বিস্তারিত জানানো যাবে।
সময়ের আলো/আরআই