ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

তীব্র তাপদাহে ঘাঘট জলে ‘সাদা পাথরের বিছানায়’ স্বস্তির খোঁজ
প্রকাশ: বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ১২:০৫ পিএম  (ভিজিট : ৬২৪)
গনগনে আগুন উগড়ে দিচ্ছে সূর্য। তাপদাহে ঘরে কিংবা বাইরে সবখানেই কাতর সবাই। তপ্তদুপুরে গরমের তীব্রতায় শহুরে মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা। তাপমাত্রার সঙ্গে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে আর্দ্রতাও। পাখা চললেও স্বস্তি নেই। ঘরের বাইরে চড়া রোদে চামড়া পুড়ে যাবার মত অবস্থা। বাতাসে বইছে আগুনের হলকা। সপ্তাহজুড়ে উত্তরের জেলা গাইবান্ধায় তাপমাত্রার পারদ ৩৫ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করছে। কিন্তু সেই তাপমাত্রার সবচেয়ে অস্বস্তিকর বিষয় ছিল গরম হাওয়া। ফলে ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তীব্র তাপপ্রবাহের গরম অনুভূত হওয়ায় জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এমন গরমে ঘরে টিকতে না পেরে শহুরে মানুষ স্বস্তির খোঁজে ছুটছেন পুকুর-জলাশয়ে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে গাইবান্ধা জেলা শহরের ভেড়ামারা রেলসেতু এলাকায় ঘাঘট নদের পাড়ে গিয়ে দেখা যায়- কেউ পরিবার নিয়ে, কেউ বন্ধু-বান্ধব নিয়ে, কেউ আবার একাই এসেছেন রেলসেতু সংলগ্ন ঘাঘট নদে সাদা পাথরের বিছানায় গোসল করতে।

কেউ আবার নদ পাড়ে শীতল বাতাসের স্পর্শ উপভোগের পাশাপাশি কিছুটা সময় অতিবাহিত করতেই এসেছেন। নদের স্রোতের সঙ্গে মৃদু বাতাসে এক অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হয় ঘাঘট পাড়ে। তীব্র গরমের অস্বস্তি চারদেয়ালে রেখে শহুরে মানুষ এখানে পেয়ে যান স্বস্তির খোঁজ। আর তাই দুপুর থেকে সন্ধ্যা বিভিন্ন বয়সী মানুষ ভিড় করেন ঘাঘট পাড়ে।

গাইবান্ধা রেলওয়ে স্টেশনের আউটার সিগন্যাল সংলগ্ন ভেড়ামারা রেলসেতুর গার্ডার ঘাঘট নদের স্রোত থেকে রক্ষার জন্য সেতুর নীচে ঘাঘটের দুই পাড়ে বেশ কিছু এলাকাজুড়ে ফেলা হয় সাদা পাথর। দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি-বন্যায় দুই পাড়ের অসংখ্য পাথর নদীতেও এসে পড়ে। এসব সাদা পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলে ঘাঘটের স্বচ্ছ আর বরফ শীতল জল।

ঘাঘটের বুকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সাদা পাথরের বিছানা এ জায়গাটির শোভা বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক গুণ। সাদা পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা নদের পানির স্রোত নয়ন জুড়ায়। শীতল জলের স্পর্শে প্রাণ জুড়িয়ে যায় নিমিষে। পাথরের ওপর দিয়ে বয়ে চলা পানির কলকল শব্দে যেন পাগল করা ছন্দ। বরফ গলার মতো ঠা-া সেই পানিতে তাপদাহের এই সময়ে শরীরটাকে শীতল করতে অনেকেই ছুটে আসছেন এখানে। যা সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের ধলাই নদের উৎসমুখে সাদা পাথরের পর্যটন স্পটের কথা মনে করিয়ে দেয়।

তাপপ্রবাহের এমন পরিস্থিতিতে গরমে ঘরে থাকাও যখন কঠিন হয়ে পড়েছে, সে রকম সময়ে বুধবার সূর্য যখন ঠিক মাথার উপর- তখন গাইবান্ধা পৌর শহরের একদল কিশোর-তরুণকে ঘাঘট নদে সাদা পাথরের বিছানায় শরীর ডুবিয়ে মন জুড়িয়ে নিতে দেখা যায়। তাদেরই একজন মানিক জানায়, এমন গরমে ঘরে টিকতে না পেরে ঘাঘটের জলে এসে নেমেছে তারা। গত কয়েকদিন সকাল থেকেই যেন বাতাস নয়, আগুনের গোলার তাপ এসে গায়ে লাগছে। বেলা বাড়লে গরম আরও বেশি লাগে। বন্ধুদের নিয়ে পানিতে ঝাঁপাঝাঁপিতে কিছুটা আরাম বোধ হয় বলে জানায় সে।

সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে উষ্ণ সময় পার করছে গাইবান্ধাবাসী। টানা কয়েকদিনের খরতাপে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। তীব্র গরমে শুধু দুপুরে নয়, রাতেও স্বস্তি পাচ্ছেন না তারা।

এদিকে অস্বাভাবিক এই গরমে ডায়রিয়া ও হিট স্ট্রোকসহ পেটের নানা ধরনের পীড়া দেখা দিতে পারে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি আছে নবজাতক, শিশু, গর্ভবতী নারী, শ্রমজীবী ব্যক্তি, বয়স্ক মানুষ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তি, চিকিৎসাধীন ব্যক্তি ও অতিরিক্ত ওজনের মানুষ। খুব প্রয়োজন না হলে রোদে বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।


সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close