ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইলের শাড়ি বিক্রির আশা
প্রকাশ: শনিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৪, ৭:২০ এএম আপডেট: ০৬.০৪.২০২৪ ৭:৪৩ এএম  (ভিজিট : ৪১৯)
টাঙ্গাইলে আলো আঁধারির ছোট বড় তাঁতশাড়ির কারখানায় অবিরাম তাঁত বুনে যাচ্ছেন কারিগররা। ভোর হতে তাঁতের খটখট শব্দে মুখর থাকছে পুরো তাঁতপল্লি। পুরো এলাকায় শুধু মাকু আর শানার ঠোকাঠুকির শব্দ। খটাখট শব্দে পরস্পরকে জড়িয়ে যায় লম্বালম্বি ও আড়াআড়ি রাখা সুতাগুলো। টানা-পড়েন মিশ্রণ আর তাঁতির হাত ও পায়ের ছন্দে তৈরি হয় বর্ণিল টাঙ্গাইল শাড়ি। এবারের ঈদ ও পহেলা বৈশাখে ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ির বিক্রির আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। 

ব্যবসায়ীরা জানান, জেলার বাজিতপুর, কৃষ্ণপুর, বেলতা, পুটিয়াজানি, কালিহাতীর বল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় শাড়ি উৎপাদন হলেও মূলত দেলদুয়ারের পাথরাইল টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানী হিসেবে খ্যাত।

করোনাভাইরাসের পর এবার ঈদ ও পহেলা বৈশাখে উৎসবে মাতবে বাঙালিরা। এ সুযোগে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি হবে বলে মনে করছেন তারা। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় গত কয়েক বছরের তুলনায় টাঙ্গাইল শাড়ির বাণিজ্য ভালো হবে। ঈদ গরমের মধ্যে হওয়ায় গরম সহনশীল এমন শাড়ি বেশি বিক্রি হচ্ছে। পাইকার ও ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে শাড়ি বুননের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিক। 

রুমা রায় নামের এক নারী শ্রমিক বলেন, আগে আমরা হাতে শাড়ির সুতা কাটতাম। এখন মেশিন কাটতে হয়। বর্তমানের চেয়ের আগের কাজের দামও বেশি ছিল, লাভও ভালো হতো। এখন মেশিনের বিদ্যুৎ বিল ও ব্লেডে মাসে প্রায় হাজার টাকা বাড়তি খরচ হয়। অন্য কাজ না পারায় এই কাজ বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে। 

মুসা খা নামের এক শ্রমিক বলেন, করোনার পর এবার কাজের চাপ একটু বেড়েছে। কাজের চাপ বাড়লেও আমাদের তেমন মজুরি বাড়েনি। তাই অনেক শ্রমিক এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। 

টাঙ্গাইল শাড়ির ব্যবসায়ী মিনহাজ মিয়া জানান, রোজা শুরু হওয়ার আগে থেকেই তারা শাড়ি তৈরি করে মজুদ করেছেন। এবার হাফ সিল্ক, মিক্স কটন, পিওর সিল্ক ও সুতি শাড়ি বেশি তৈরি হয়েছে। রোজা শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন পাইকারি শাড়ি কিনতে। 

সাভার থেকে আসা ফাতেমা তাবাসুম নামের এক নারী ক্রেতা বলেন, পিওর টাঙ্গাইল শাড়ি কেনার জন্য কষ্ট করে আসা। নিজ ও পরিবারের সদস্যদের জন্য সাতটি শাড়ি কিনেছি। মানে ভালো, দামও সাধ্যের মধ্যে। তাই কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলে শাড়ি কিনতে আসি। 

নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা হুমায়ন সিকদার বলেন, বাহারি ডিজাইন এবং দাম নাগালের মধ্যে থাকায় ঈদসহ যেকোনো উৎসব পার্বণে গ্রাহকদের কাছে বিভিন্ন মানের টাঙ্গাইল শাড়ির কদর রয়েছে। তুলনামূলকভাবে দামে কম হওয়ায় যেকোনো উৎসবের আগে আমি এখান থেকে শাড়ি কিনে নিজ এলাকায় বিক্রি করে থাকি।

জেলা শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক বলেন, করোনার পর এবার টাঙ্গাইল শাড়ির ব্যবসা একটু ভালো হবে। টাঙ্গাইল শাড়ির চাহিদা সবসময় থাকে। তবে ঈদকে কেন্দ্র করে তা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তাই উৎপাদক কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গত বছর ৭৪ লাখ পিস টাঙ্গাইল শাড়ি প্রতিবেশী দেশ ভারতে রফতানি হয়েছে। 

টাঙ্গাইল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাটির পরিচালক পলাশ চন্দ্র বসাক বলেন, এ বছর রাজনৈতিক পরিবেশ স্থিতিশীল হওয়ার পর গত কয়েক বছরের তুলনায় ব্যবসায়ীদের বিক্রি অনেক ভালো হয়েছে। 

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় টাঙ্গাইল শাড়ির কদড় রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার টাঙ্গাইল শাড়ি বিক্রি হবে। এতে ব্যবসায়ীরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। 

তিনি আরও বলেন, রোজার প্রথম সপ্তাহেই পাইকারি বেশির ভাগ শাড়ি বিক্রি হয়েছে। এখন খুচরা শাড়ি কিনতেও দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতারা ভিড় করছেন।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close