ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

রং আর মেরামতে প্রস্তুত হচ্ছে লক্কড়-ঝক্কড় বাস
প্রকাশ: শুক্রবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৪, ৫:৫১ পিএম  (ভিজিট : ৮৫৮)
ঈদে যাত্রী পরিবহনের জন্য বাস মেরামতের হিড়িক পড়েছে সাভারের ওয়ার্কশপগুলোতে। শেষ সময়ে লক্কড়-ঝক্কড় বাস গুলোকে সড়কে নামাতে ব্যস্ত শ্রমিক-মালিকরা। কারিগরি মেরামত শেষে এসব বাসে করা হয় রঙের কাজ। আর এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন সাভারের ওয়ার্কশপগুলোর শ্রমিক মালিকরা। মেরামত শেষে পুরনো বাস গুলো নতুন রূপ নিয়ে যাত্রী পরিবহন করবে বিভিন্ন রুটে।

সাভারের বিভিন্ন ওয়ার্কশপ ঘুরে দেখা যায়, কেউ বাসের বডি মেরামত করছেন, কেউ বানাচ্ছেন আসন, কেউবা আবার রঙ করা নিয়ে ব্যস্ত। দিন-রাত খাটছেন ঈদের আগে বাস ডেলিভারি দিতে।

সাভারের বলিয়ারপুর এলাকার একটি ওয়ার্কশপে রঙের কাজ করেন মো. ইউসুফ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাস মেরামতের কাজে যুক্ত। সারাবছর তার হাত ধরে বহু যানবাহন পায় নতুন চেহারা। তবে ঈদ এলেই তার ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।

ইউসুফ বলেন, একটি গাড়ি রঙ করলে ১ লাখ ১০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নেওয়া হয়। আবার কোনো গাড়ি ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকাও হয়ে যায়। গাড়ির কাজের উপর নির্ভর করে খরচের হিসাব। সারা বছর কাজ থাকলেও, ঈদের সময় কাজের চাপ বেড়ে যায়। এ সময় টাকাও একটু বেশি পাওয়া যায়।

মো. জাকির হোসেন নামে এক শ্রমিক বলেন, ঈদের আগ মুহূর্তে কাজ একটু বেশি হয়। অন্যান্য সময় ডিউটি হয় সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। কিন্তু ঈদ আসলে তখন আর ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এই হিসেবে কাজ হয় না। ঈদের কাজের চাপে নাওয়া-খাওয়াও ঠিকঠাক মত করতে পারি না। 

এদিকে ঈদের কমপক্ষে ৪ থেকে ৫দিন আগে মেরামতের কাজ শেষ করে বাস বুঝিয়ে দেওয়ার কথা রয়েছে ওয়ার্কশপ মালিকদের। কিন্তু অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যাহত হচ্ছে কাজ। আমিনবাজারের ওয়ার্কশপ মালিক ইসমাইল ব্যাপারী বলেন, কারেন্টের জন্য প্রচুর লস হচ্ছে আমাদের। আমরা একটা গাড়ির কাজ করার জন্য সময় নেই এক সপ্তাহের। সেখানে ১০ থেকে ১৫ দিনও লেগে যাচ্ছে। দেখা যায় এক ঘণ্টা কারেন্ট থাকলে দেড় ঘণ্টা কারেন্ট থাকে না। প্রতি বছর ঈদ যাত্রায় দূরপাল্লার রুটের বাসের সংকট তৈরি হয়, সেই সংকটকে সুযোগে পরিণত করে একশ্রেণীর অসাধু চক্র। ফিটনেস বিহীন লক্কড়-ঝক্কড় দুর্বল বাসগুলোকে ঘষামাজা, জোড়াতালি আর রঙ করে সড়কে নামিয়ে দেন তারা। সাধারণত যে বাসগুলো রাজধানীর ভেতরে চলাচল করে সেগুলোই পরে দূর পাল্লার যাত্রার জন্য মহাসড়কে নামিয়ে দেওয়া হয়। ফলে স্বপ্নের ঈদ যাত্রা অনেক সময় রূপ নেয় দুঃস্বপ্নে।

সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল হওয়ায় এখানে বসবাস করেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কয়েক লক্ষাধিক শ্রমিক। ঈদের ছুটিতে এসব শ্রমিকেরা বাস রিজার্ভ করে ছুটেন নাড়ির টানে। সাধারণ এসব শ্রমিকরা জানে না কোন গাড়ির ফিটনেস আছে বা নেই। 

গার্মেন্টস শ্রমিক রেজাউল হক মানিক জানান, প্রতিবছরের মত এবছরও মা বাবার সঙ্গে বাড়িতে ঈদ করবেন তিনি। ঈদের দুই দিন আগে ছুটি দেওয়া হবে তার কারখানা। পরিকল্পনা আছে এবারও অন্যান্য শ্রমিকদের সাথে মিলে বাস রিজার্ভ করে মধ্যরাতে রওনা দেওয়ার। এতে ঈদের বাড়তি ভাড়া থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলে তাদের। তবে বাসের ফিটনেস বা অন্য কোন বিষয়ে তেমন কোন ধারণা নেই তার।  

তিনি বলেন, আমাদের পক্ষে তো এগুলো জানা সম্ভব না। এগুলো তো পুলিশের কাজ।

এ বিষয়ে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সাথে ইতিপূর্বে আমাদের বৈঠক হয়েছে, সেখানে আমরা জানিয়েছি লক্কড়-ঝক্কড় বা ফিটনেস বিহীন কোন গাড়ি মহাসড়কে আসার সুযোগ নেই। এরপরেও যদি কেউ নির্দেশনা অমান্য করে মহাসড়কে চলে আসে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
  
সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  ঈদ যাত্রা   ফিটনেসবিহীন বাস   লক্কড়-ঝক্কড় বাস   সাভার   




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close