ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

ঈদযাত্রায় আতঙ্কে যাত্রীরা
বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে ২১ মাসে ৮৮ দুর্ঘটনায় ৯৫ প্রাণহানি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪, ১:৪২ এএম  (ভিজিট : ৫৪৮)
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদযাত্রায় মানুষের ভোগান্তি হলেও এবার দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে আন্তর্জাতিক মানের মহাসড়ক হওয়ায় জানজট নিরসন হলেও মানুষের মাঝে বিরাজ করছে এক অজানা আতঙ্ক। শুধু বেপরোয়া গতিতে যানবাহন চালানোর কারণে এ এক্সপ্রেসওয়েতে অনবরত ঘটছে দুর্ঘটনা। বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও অদক্ষ চালকের বেপরোয়া গতিকেই দায়ী করছেন।

উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ে। এ এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চলাচলের জন্য দেওয়া হয়েছে গতিসীমা। তবে এ গতিসীমার কোনো তোয়াক্কা না করেই ওভার স্পিডে গাড়ি চলাচল করছে এক্সপ্রেসওেয়তে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। দুর্ঘটনার ফলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়ের ফরিদপুর অংশ যেন এখন এক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। 

হাইওয়ে পুলিশের তথ্য মতে, ২০২২ সালের ২৫ জুন এ এক্সপ্রেসওয়ে চালু হয়। চালুর পর থেকে এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৪টি। এসব দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৬৮ জন। এর মধ্যে ২০২৩ সালের মার্চ মাসেই ৩টি দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যু হয়। এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৮৮টি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৯৫ জনের। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে ১২৪ জন। আহতদের মধ্যে অনেকেই এখন পঙ্গু।

গত কুরবানির ঈদে পরিবার নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে ফরিদপুরের ভাঙ্গার মালিগ্রামে একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক বিভাজনের ওপরে উঠে গেলে একই পরিবারের ৪ জনসহ ৫ জন এ মহাসড়কে নিহত হয়। এ বছরও ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের মধ্যে সেই আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ভাঙ্গা উপজেলার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, কিছু বাস মালিক ও চালক আছেন যারা অতিরিক্ত মুনাফার লোভে ঈদের সময় দিনরাত গাড়ি চালিয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাচ্ছেন। আর দীর্ঘক্ষণ গাড়ি চালানোর ফলে চালকরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, কিছু সময় দেখা যায় হেলপারও চালকের আসনে বসে গাড়ি চালাচ্ছেন। ফলে এতেও দুর্ঘটনা বেড়ে চলেছে।  

সাইফুল্লাহ শামীম নামে একজন বলেন, কয়েক দিন পরপর এই এক্সপেসওয়েতে দুর্ঘটনা ঘটছে। আর তাতে অকালেই ঝরছে তাজা প্রাণ। এর অন্যতম কারণ হিসেবে তিনি মনে করছেন গাড়িচালকের বেপরোয়া গতি। এ ছাড়াও তিনি বলেন, প্রশাসনের নজরদারির অভাবেও দুর্ঘটনাগুলো ঘটছে। কেননা পুলিশ যদি প্রতিনিয়ত ওভার স্পিডের কারণে মামলা করত তা হলে দুর্ঘটনা অনেকাংশ কমে যেত।

বাসযাত্রী আহমদউল্লাহ বলেন, ঈদ এলেই দেখা যায়, একশ্রেণির অসাধু পরিবহন ব্যবসায়ী ফিটনেসবিহীন গাড়ি মেরামত করে রাস্তায় নামায়। এর একটাই কারণ, ঈদের সময় যাত্রী পরিবহন করে বাড়তি লাভ করা। ফিটনেসবিহীন গাড়িগুলোই অধিকাংশ সময় দুর্ঘটনায় পড়ছে।

এ বিষয়ে বাসচালকরাও দোষ স্বীকার করে বলেন, বাসচালকদের বেতন কমে যাওয়ায় বর্তমানে প্রশিক্ষিত চালকের অভাব। ফলে বাসমলিকরা অল্পবয়সি ও অদক্ষ চালক দিয়ে বাস চালাচ্ছেন। এ কারণে অল্পবয়সি চালকরা তাদের উগ্র মনোভাবের কারণে অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালাচ্ছেন। তারা সঠিকভাবে গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।

হাইওয়ে পুলিশের মাদারীপুর রিজিওনের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মো. শাহিনূর আলম খান বলেন, ঈদের সময় যাত্রী পরিবহনের জন্য পরিবহন চালকদের মধ্যে পাল্লা দেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। এটা রোধে চালকদের নিয়ে সচেতনতামূলক সভা ও লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্ঘটনা এড়াতে প্রতিনিয়ত ওভার স্পিডের মামলা করা হচ্ছে। আসছে ঈদে ওভার স্পিড নিয়ন্ত্রণ এবং কোনো ধরনের দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য হাইওয়ে পুলিশ সবসময় মাঠে থাকবে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close