ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

শিল্পকলায় স্বাধীনতা দিবস উদযাপিত
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ২০ শিল্পীর কন্ঠে গান
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ, ২০২৪, ৮:৪৫ পিএম  (ভিজিট : ৩৭৮)
বাঙালি জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। দিনটি উপলক্ষ্যে শিশু, প্রতিশ্রুতিশীল, বিশিষ্ট ও বরেণ্য শিল্পী ও গুণীজনদের নিয়ে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। তারমধ্যে অন্যতম একই মঞ্চে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ২০ জন কণ্ঠ ও শব্দ সৈনিকের উপস্থিতি!

১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে সেই সময় যেসব গান প্রচারিত হতো, যার মাধ্যমে দেশের আপামর জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধারা উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় নাট্যশালায় সেইগানগুলো নতুন প্রজন্মের সাথে সম্মিলিতভাবে পরিবেশন করলেন কণ্ঠ ও শব্দ সৈনিকরা। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে এ পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয় এদিন সকাল ১১টায়। সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আগে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নাহিদ ইজাহার খান, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে শব্দসৈনিক অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ এবং সভাপতিত্ব করেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। এছাড়াও স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির সচিব সালাহউদ্দিন আহাম্মদ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিশুদের উদ্দেশ্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন- “তোমরা দেশকে ভালোবাসো, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানো এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে যদি তোমাদের সামনে কেউ কোনো অবজ্ঞা বা কটাক্ষ করে তাহলে তোমরা প্রতিবাদ করবে, কারণ তোমরা হলে আমাদের সামনের প্রজন্ম, তোমরাই এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে।”

সভাপতির বক্তব্যে একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, “আমাদের আজকের আয়োজনটি সাজানো হয়েছে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ২০ জন শিল্পী এবং বর্তমান প্রজন্মের শিল্পীদের নিয়ে। এর উদ্দেশ্য হলো, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীরা, বর্তমান শিল্পীরা এবং শিশু শিল্পীরা একই সাথে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান গাইবে এবং আমি এটিই বলতে চাই যে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সেই সময়ের ভাবনা ও চেতনা বর্তমান ও আগামী প্রজন্মের মাঝে প্রসারিত হবে, ছড়িয়ে যাবে।”

মহাপরিচালক আরো বলেন,‌ আমাদের এ প্রত্যয় ব্যক্ত করতে হবে যে আমাদের দেশটা যেনো আর কোন ষড়যন্ত্রের শিকার না হয়, দেশটা যেনো আর ইতিহাস বিকৃতির শিকার না হয়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শব্দসৈনিক অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা প্রায়শই দেখি, সাধারণ জনগণের মধ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দিলে অনেকেই আমাদের বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস সম্পর্কে অনেক ভুল উত্তর দিয়ে থাকে যা আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমি বলবো, প্রত্যেকেরই দ্বায়িত্ব আমাদের ছেলে মেয়েদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস শিক্ষা দেয়া।”

সাংস্কৃতিক পর্বে অংশ নেন দেশের মুক্তিযুদ্ধে শব্দ ও কণ্ঠ সৈনিক হিসেবে অবদান রাখা ২০ জন গুণী শিল্পী। কণ্ঠশিল্পী মো. কামাল উদ্দিন আহমেদ, মো. মনোয়ার হোসেন খান, এম.এ. মান্নান, মো. রফিকুল আলম, তিমির নন্দী, শিবু রায়, মনোরঞ্জন ঘোষাল, মো. আবু নওশের, মলয় কুমার গাঙ্গুলী, রথীন্দ্রনাথ রায়, কল্যাণী ঘোষ, রূপা ফরহাদ, মালা খুররম, জয়ন্তী লালা, ছন্দা ভূঁইয়া হাজরা, শীলা ভদ্র, আজহারুল ইসলাম ও শাহীন সামাদ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী ও ইংরেজী সংবাদ পাঠক শব্দসৈনিক অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ এবং কর্মী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. মনোয়ার হোসেন খান।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই তাদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন শিশু শিল্পীরা। পরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ‘নোঙর তোল তোল’, ‘স্বাধীন স্বাধীন’ পরিবেশন করেন তারা।

এরপর মুক্তিযুদ্ধের চরমপত্র পাঠ করেন আল আমিন শেখ। মাঝে ঢাকা সাংস্কৃতিক দল পরিবেশন করে দলীয় সংগীত ‘জয় বাংলা জয় বাংলা বইরা রে’ এবং ‘সাড়ে সাত কোটি বাঙালির’। মো. আবু নওশের এবং মো. মনোয়ার হোসেন খান পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতারের সেই সময়ের জনপ্রিয় ‘জল্লাদের দরবার’নাট্যাংশ। এরপর ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ এবং পূর্ব দিগন্তে সূয উঠেছে’পরিবেশন করেন তারা।

দলীয় সংগীত পরিবেশন করে গেন্ডারিয়া কিশলয় কচি কাঁচার মেলা ‘সোনায় মোড়ানো বাংলা মোদের’। এরপর চরমপত্র পাঠ করেন শিশুশিল্পীরা। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে সমর্পণকলা কেন্দ্র। ‘জনতার সংগ্রাম চলবে’গানে নৃত্য পরিবেশন করেন তারা।

সবশেষে দলীয় সংগীত পরিবেশন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির শিশু সংগীতদল ‘শোন একটি মুজিবের থেকে’। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ডালিয়া আহমেদ।

এর আগে সকাল ৯টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধ সাভারে একাডেমির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠ ও আবৃত্তি অনুষ্ঠান। এতে কবিতা পাঠ করেন- গোলাম সারোয়ার, আবৃত্তিকার ইকবাল খোরশেদ,মাশকুর-এ -সাত্তার কল্লোল, আহসান উল্লাহ তমাল, মাহমুদা আক্তার, লায়লা আফরোজ, রেজিনা ওয়ালী লীনা, মিজানুর রহমান সজল এবং কাদের তালুকদার।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close