ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

নওগাঁ-২ আসনে
নৌকা ও ট্রাকের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১:৫৭ পিএম  (ভিজিট : ৮২০)
নওগাঁ-২ (ধামইরহাট ও পত্নীতলা) আসনে স্থগিত হয়ে যাওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দ্বিতীয় ধাপে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১২ ফেব্রুয়ারি। এ আসন থেকে আওয়ামীলীগ মনোনীত সাবেক এমপি শহীদুজ্জামান সরকার (নৌকা) ও আওয়ামীলীগ সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আখতারুল আলমের (ট্রাক) সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে এমনটাই দাবির পাশাপাশি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট নিশ্চিতের দাবী জানান ভোটাররা।

জানা গেছে, এ আসনটিতে ওই দুই প্রার্থীরাসহ মোট চারজন ভোটের মাঠে লড়ছেন। তারা হলেন, জাতীয় পার্টির তোফাজ্জল হোসেন (লাঙ্গল) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী মাহমুদ রেজা (ঈগল)।

উল্লেখ্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আট দিন আগে গত ২৯ ডিসেম্বর নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল) আমিনুল হক মারা গেলে ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করে ইসি। পরবর্তীতে গত ৮ জানুয়ারি ওই আসনের নির্বাচনের নতুন তফসিল ঘোষণা করে ইসি। নতুন তফশিল অনুযায়ী আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ভোট অনুষ্ঠিত হবে।

বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, শহীদুজ্জামান সরকার ১৯৯১ সালে বিএনপির প্রার্থী আব্দুল মান্নান কে হারিয়ে প্রথম সংসদ সদস্য নিদর্বাচিত হন। এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে শামসুজ্জোহা খান জোহা ১৯৯৬-২০০১ সালে নির্বাচিত হন। এরপর ২০০৮-২০২৩ সাল পর্যন্ত ১৫ বছর ধরে শহীদুজ্জামান সরকার দলের দুর্দিনের কান্ডারী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের দলের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাদ দিয়ে জামায়াত ও বিএনপি থেকে আসা সুবিধাবাদীদের চাকরি ও গুরুত্বপূর্ণ পদে পুনর্বাসনের মাধ্যমে ত্যাগী নেতাদের কৌশলে কোণঠাসা করে রাখেন। এ কারণে দুই উপজেলার সাধারণ ভোটাররা ক্ষুদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নতুন মুখ হিসেবে পরিচিত ইঞ্জিনিয়ার আখতারুলের উপর আস্থা ও ভরসা রাখছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারী) ধামইরহাট ও পত্নীতলা উপজেলায় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গ্রামের হাট বাজার, সড়কের দু'পাশ ও মোড়ে প্রার্থীদের ব্যানার আর পোস্টারে ছেয়ে গেছে। পুরো উপজেলায় ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে প্রচার প্রচারণায়। কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে উন্নয়নের ফিরিস্তি দিতে প্রার্থীরা কর্মী ও সামর্থকদের সঙ্গে নিয়ে ছুটছেন ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। সকাল-সন্ধ্যা পাড়ায় মহল্লায় এবং চায়ের দোকান গুলোতে নতুন নাকি পুরাতন মুখ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন তা নিয়ে চলছে পক্ষে ও বিপক্ষে নানান আলোচনা ও সমালোচনা। এসময় প্রবীণ ও বর্তমান ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে শহীদুজ্জামান সরকারের পছন্দের লোকদের (খলিফা) ক্ষমতার অপব্যবহার, টেন্ডারবাজি ও দলবাজি থেকে পরিত্রান পেতে নতুন ও যোগ্য নেতৃত্বকেই এমপি হিসেবে নির্বাচিত করবেন বলে জানান।

অন্যদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আইয়ুব হোসেন নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার ঘোষণা করে (ট্রাক) আখতারুলের পক্ষ নিয়েছেন। এ কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন ও ভোটের মাঠে সাধারণ ভোটারদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে এ আসনে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না এমনটাই দাবি করেন আওয়ামী লীগের একাধিক বঞ্চিত সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটাররা।

সুষ্ঠু ভোট হলে নৌকাকে ডুবিয়ে শেষ হাসিটা হাসবেন (ট্রাক) স্বতন্ত্র প্রার্থী আখতারুল এমনটাই মনে করছেন দুই উপজেলার ভোটাররা। অন্যদিকে ভোটের মাঠে খুব একটা সুবিধা করতে না পারলেও জাতীয় পার্টির (লাঙ্গল) প্রার্থী অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন ও অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী মাহমুদ রেজা (ঈগল) বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল হাই দুলাল সময়ের আলোকে বলেন, 'ধামইরহাট ও পত্নীতলায় এমপির পছন্দের খলিফাদের কারণে ১৫ বছর ধরে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগসহ এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। বালুমহল থেকে শুরু করে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত খলিফারের পরিবর্তন করা না হলে আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব সংকট দেখা দেবে।'

স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আখতারুল আলম সময়ের আলোকে বলেন, 'ধামইরহাট ও পত্নীতলা উপজেলার শিক্ষিত ও বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থান তৈরি ও কৃষি বান্ধব শিল্প কারখানা স্থাপন করে কৃষকদের জনসম্পদে পরিণত করতে চান।'

তিনি এও বলেন, দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ দলবাজি, টেন্ডারবাজি ও সিন্ডিকেট থেকে মুক্তি চায়। একারণে কর্মীবান্ধব নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা এগিয়ে নিতে এই এলাকায় মানুষ তার প্রতি আস্থা রেখেছেন।'

পত্নীতলা উপজেলার পাটিচোড়া ইউনিয়ন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জেলা মুক্তিযুদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার ছাদেক উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, 'বর্তমান সংসদ সদস্য দুই উপজেলায় তার পছন্দের খলিফারদের নিয়ে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। এতে করে আওয়ামী লীগ দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এদের মধে ত্যাগী ও সাবেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দল থেকে বিচ্ছিন্ন করে বিএনপি জামাত থেকে আসা হাইব্রিডদের পুনর্বাসন করা হয়েছে।'

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামিলীগের সভাপতি দেলদার হোসেন বলেন, 'উপজেলায় খলিফা বলে কেউ নেই। ১৫ বছর দল ক্ষমতায়। এমপিও ক্ষমতা রয়েছেন। গণতান্ত্রিক পন্থায় দলের বিভিন্ন সেক্টরে কমিটি হয়েছে। কমিটিতে অনেক নতুন নতুন মুখ এসেছে আবার পুরাতন অনেক নেতাকর্মীরা ঝরে পড়েছেন। এতে করে অনেকের মনে কষ্ট থাকতে পারে কিন্তু ত্যাগী নেতাকর্মীরা দলছুট হয়েছে বা অন্য পক্ষ নিয়েছে এ বিষয়ে তাঁর জানা নেই।'

তিনি আরও বলেন, 'দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এ এলাকার মানুষ যোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে আওয়ামী লীগ মনোনীত শহীদুজ্জামান সরকারকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন।'


সময়ের আলো/এএ/




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close