রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার ১নং নওপাড়া ইউনিয়নের নওপাড়া সড়ক থেকে মোহনগঞ্জ পর্যন্ত দুই হাজার ৮৫০ মিটার রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অর্থায়নের রাস্তা নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ডলি এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে কাজ নেন ঠিকাদার মো. হিরুল ইসলাম। এ কাজে অত্যন্ত নিম্নমানের নাম্বার বিহীন ইট ও মাটি যুক্ত বালু ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলেন, এই রাস্তার কাজ তদারকিতে দুর্গাপুর উপজেলার এলজিডির কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে বলেও অভিযোগ করেন। এলজিইডির ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে প্রকল্পে এক কোটি ২৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ প্রকল্পের নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাস্তার দুই পাশের কাটা মাটির মিশ্রিত বালি দিয়ে বক্স না করেই নিম্নমানের পুরাতন ইট খোয়াসহ নিম্ন মানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করছে রাস্তায়। এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অনিয়মের অভিযোগের পর কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করা হলেও এখনও অনিয়মের মাধ্যমে কাজ সমাপ্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ঠিকাদার মো. হিরুল ইসলাম।
এ রাস্তায় নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের ফলে কিছু দিনের মধ্যেই রাস্তাটি ভেঙে পানিতে যাচ্ছে সরকারি টাকা। কয়েক মাস যেতে না যেতেই ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে এসব সড়ক। ফলে সরকারি বরাদ্দে অবমূল্যায়নের ফলে দুর্ভোগের শিকার হতে হয় এলাকাবাসীদের।
মঙ্গলবার ৬ (ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সড়কের কাজে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি করা হচ্ছে। বালুর পরিবর্তে কাদামাটি দিয়ে তার ওপর নিম্নমানের পুরনো ইট দিয়ে সোলিং ও খোয়া ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। নিম্নমানের ইটের ভাঙা অংশ রাবিশ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। পুরনো সড়কের পিচ না উঠিয়ে তার উপরই নতুন কাজ করা হচ্ছে। এতেও নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তার কাজে স্থানীয় সরকার প্রকৗশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কাউকে এসে তদারকি করতে দেখা যায়নি।
অন্যদিকে সদ্য নির্মিত কানপাড়া বাজার রোড থেকে বখতিয়ারপুর ডিগ্রি কলেজ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তায় ৬২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ রাস্তার নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান কেটি জেড ইন্টারন্যাশনাল ঠিকাদার মো. জিয়ারুল ইসলাম রাস্তার ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করেছেন নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে যার ফলে কাপের্টিয়ে পা দিয়ে চাপ দিলে তা ভেঙে যাচ্ছে।
স্থানীয় আলী হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ঠিকাদারকে টেন্ডারের চুক্তি অনুযায়ী কাজ করার কথা বললেও কোনো তোয়াক্কা না করে অনুমোদন বিহীন নিম্নমানের ইট, খোয়া, বালি ও কংক্রিট দিয়ে কাজ সম্পূর্ণ করার পাঁয়তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ডলি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারীরা মো. হিরুল ইসলাম ও ঠিকাদার মো. জিয়ারুল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
দুর্গাপুর উপজেলা এলজিডির প্রকৌশলী মাসুক-ই-মোহাম্মদ বলেন, রাস্তার কাজে অনিয়ম পেলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি খোঁজ-খবর নিয়ে বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি।
সময়ের আলো/আরআই