ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

ড. সৌমিত্র শেখর
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা রাখতে হবে শিক্ষার্থীদের
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ৮:০৬ এএম  (ভিজিট : ১৪৭২)
আমরা মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করি এবং সবাই ভালো মানুষ হিসেবেই জন্মগ্রহণ করি। কিন্তু বড় হয়ে আমরা সবাই ভালো মানুষ থাকতে পারি না। আমাদের ভেতরের মনুষ্যত্ববোধকে জাগ্রত করতে পারলেই আমরা ভালো মানুষ। মানুষকে গালি শেখানোর জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, মিথ্যা কথা বলা শেখানোর জন্য কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। কিন্তু তারপরও মানুষ কোথা থেকে গালি শেখে এবং মিথ্যা কথা বলে? মানুষ খারাপ হয় অভ্যাসের মাধ্যমে। আসলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখতে হবে। মানুষ যে ভালো মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করে তা অটুট রাখতে হবে। 

শিক্ষাজীবনে সর্বোচ্চ জ্ঞান অর্জনের অন্যতম বিদ্যাপীঠ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী সত্যিকারের ও সার্বিক মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার পথের দিশা পায়। বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের করণীয় বিষয়ে এসব পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। তার সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন সময়ের আলোর নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. আশিকুর রহমান।

বিষয়ের প্রতি ভালোলাগা থাকতে হবে

আমরা অনেক সময় যেসব বিষয় পাব বলে ভেবে রাখি, তার সঙ্গে পরবর্তীকালে পাওয়া বিষয় বা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যে সংযুক্তি সেটা হুবহু মেলে না। আমি বলব, উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনেকটা ভালোবাসার মতো। ভালোবাসার ক্ষেত্রে যেমন সুনির্দিষ্ট মানুষটির সঙ্গে একটা মনোজগতের সম্পৃক্ততা থাকে এবং তাতে সারা জীবন চলা যায়। একইভাবে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিষয় নির্বাচন করাটা খুবই জরুরি। যে বিষয়টি সম্পর্কে নিজের ধারণা নেই, যে বিষয়টিকে ভালো লাগে না, সেই ধরনের বিষয় নির্বাচন করা উচিত হবে না। যে বিষয়ে তার ভালো লাগা রয়েছে, সেই বিষয়েই তার ভর্তি হওয়া উচিত। 

থাকতে হবে আগ্রহ 

উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফল, পারফরম্যান্স, দক্ষতা- এ বিষয়গুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অর্জিত সার্টিফিকেট কর্মজীবনে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারছে কিনা, সেটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির সময়, তারা যখন ভর্তি হবে, তারা যে বিষয়গুলো পছন্দ করে, যেন সেই বিষয়গুলোতে ভর্তি হয়। এতে তার উচ্চ শিক্ষার আগ্রহটা থাকবে এবং উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে সে আনন্দ পাবে। এ জন্য বিষয় নির্বাচনের জন্য আগে থেকেই চিন্তাভাবনা করা দরকার। 

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি

একজন শিক্ষার্থী স্নাতক সম্পন্ন করতে চার বছর ও স্নাতকোত্তরের জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় পায়। এ সময়ে পড়াশোনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই মনে করেন, সার্টিফিকেট একটা হলেই হলো; কিন্তু আমার কাছে এমন মনে হয় না। যে বিষয় পড়ছি, আমাদের সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। পাশাপাশি তখন থেকেই নির্বাচন করে ফেলতে হবে, ভবিষ্যতে আমি কী হতে চাই। কেউ বেকার থাকতে চায় না। মা-বাবার তো চিন্তার মধ্যেই আসে না, তার সন্তানটি উচ্চ শিক্ষা লাভ করেও বেকার থাকবে। এ কারণে একটা পারিবারিক দায়বদ্ধতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকে এবং প্রতিষ্ঠিত হতে না পারলে সমাজে নিজেকে একজন আইসোলেটেড মানুষ মনে হয়। এ জন্যই আগেভাগে ঠিক করতে হবে কোন ধরনের পড়াশোনা আমি করব কিংবা কী ধরনের চাকরি চাই। 

সিদ্ধান্ত নিতে হবে একদম শুরুতেই 

কেউ যদি সরকারি চাকরি করতে চায় তবে প্রথম বছর থেকেই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। গ্লোবাল কম্পিটিশন করতে চাইলে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে। মেডিকেল কলেজের একজন স্টুডেন্ট যদি ডাক্তার হতে চায়, তা হলে এক ধরনের পড়াশোনা। আবার সে যদি ডাক্তার না হয়ে একজন ফরেন ক্যাডার হতে চায়, এ জন্য তাকে অন্যরকম ভাবতে হবে এবং প্রস্তুতিও নিতে হবে সে অনুযায়ী। দর্শন বিভাগের একজন শিক্ষার্থী যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে চায় তা হলে এক ধরনের পড়াশোনা, আবার সে যদি পুলিশ অফিসার হতে চায় তা হলে ভিন্ন পড়াশোনা। স্নাতক সম্পন্ন করার পর এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া বেশ কঠিন।

গবেষণার মানের দিকে নজর দিতে হবে

গবেষণা খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। গবেষণার মধ্য দিয়েই মানুষ অনেক কিছু করে। গবেষণা না হলে নতুন কোনো কিছু আবিষ্কার হয় না। আমাদের ক্ষেত্র ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু গবেষণা করে জনসম্মুখে যে ফল আমরা প্রকাশ করি সেটার ওপর ভিত্তি করে কিন্তু একটির সঙ্গে আরেকটির সম্পর্ক দাঁড়ায়। গবেষণার পরিমাণের চেয়ে গবেষণার মানের দিকে শিক্ষার্থীদের নজর দিতে হবে।

আচরণে হতে হবে স্মার্ট

তুমি যত স্মার্ট থাকবে, তোমার মনটা তত সুন্দর থাকবে। পড়াশোনা করতে ইচ্ছে করবে। তোমার দিকে সবাই তাকিয়ে থাকবে। মানুষকে আকর্ষণ করতে হবে ব্যক্তিত্ব গঠন করে। পোশাকে স্মার্ট নয়, আচার-আচরণ, কথা-বার্তায় স্মার্ট হতে হবে। তবে অন্যদের অবজ্ঞা করলে হবে না।

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখতে হবে

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন এবং তার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে ১৯৮১ সালে বাংলাদেশে আসেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশে পৌঁছে গেছে এবং বাংলাদেশ এখন স্মার্ট বাংলাদেশের সন্নিকটে। প্রযুক্তি ও জ্ঞাননির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ প্রজন্মকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। 

সময়ের আলো/জেডআই




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close