কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্যে ভয়াবহ দূষণের শিকার মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন ও টেঙ্গারচর ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত মেঘনা নদীর শাখা নদী'টি।
বালুয়াকান্দি গ্রাম সংলগ্ন নদীতে একসময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছের বসবাস ছিল। নদীর পানি ব্যবহার হতো কৃষিকাজে। বর্তমানে কলকারখানার বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্যে নষ্ট হচ্ছে নদীর পানি। প্রতিনিয়তই বাড়ছে দূষণ। নদীটির স্বচ্ছ পানি এখন আলকাতরার মতো কালো রং ধারণ করেছে।
বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান জুয়েল সরকার জানান, মেঘনা শাখা এ নদীতে একসময় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ছিল। এখন দূষণের কারণে মাছ আগের মতো আর মাছ নেই। মিল কারখানার মালিকরা বর্জ্য ফেলে দূষিত করছেন নদীর পানি।
জানা গেছে, মেঘনা নদীর শাখা নদীটি টেঙ্গারচর ইউনিয়নের ভাটেরচর গ্রাম থেকে শুরু হয়ে বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বড় রায়পাড়া রায়পারা সংলগ্ন মেঘনা নদীর নদীর সাথে সংযুক্ত হয়েছে। নদীর দুইপাশে রয়েছে অনেক গ্রাম। বড় ভাটেরচর, ছোট রায়পাড়া, তেতৈতলা এবং মধ্যে ভাটেরচর বাজার অংশের চারপাশ থেকে নদীতে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। নদীর দুই পাশে বিশাল বর্জ্যের স্তূপে; যাতে জনজীবন বিপর্যস্ত।
মধ্যে ভাটেরচর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন বলেন, ছোটবেলায় আমরা এই নদীতে মাছ শিকার ও গোসল করেছি। বর্তমানে নদীটি দূষণের ফলে সব ঐতিহ্য হারিয়েছে। আশপাশের বিভিন্ন কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য প্রতিদিনই নদীতে নামছে।
তাছাড়া নদীপাড়ে বসবাসরতরা নিজেদের বাড়ির আবর্জনা ফেলছে নদীতে।তিনি আরো বলেন, নদীর পানি থেকে এখন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধের জন্য নদীর পাড় দিয়ে হাঁটাচলা কষ্টকর হচ্ছে।
তেতৈতলা গ্রামের জাকির হোসেন বলেন, নদীটি একসময় মিঠা পানির মাছের জন্য বিখ্যাত ছিল। এই নদীর মাছ ছিল খুব সুস্বাদু। রুই, কাতল, মৃগেল, পুঁটি, চিতল, বোয়াল, মলা, ঢেলা, চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। সবাই দলবেঁধে এসে মাছ ধরতাম।
একসময় নদীর পাড়ে বসে মানুষ আড্ডা দিত। কিন্তু সেই দিন এখন আর নেই। দূষণের কারণে এলাকায় কৃষিকাজে এই পানি ব্যবহার করা হচ্ছে না। ফলে পানির অভাবে অনেক জমি চাষ করা বন্ধ।
সময়ের আলো/এএ/