ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

বর্ষা মৌসুমে ভেঙে পড়ার আশঙ্কা
বাঁধ সংস্কারে নয়ছয়ের অভিযোগ
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪, ৩:০৪ এএম  (ভিজিট : ৫১০)
পুরোনো বাঁধের গোড়ার মাটি কেটে বাঁধের সংস্কার কাজ চলছে পুরোদমে। বাঁধের গোড়ার মাটি কেটে সেই মাটিই ফেলা হচ্ছে বাঁধে। এতে করে বাঁধটি আরও দুর্বল হয়ে পড়ছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে এটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় দুশ্চিন্তার মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন স্থানীয় কৃষকসহ সাধারণ মানুষ।  

স্থানীয়রা বলছেন, পুরোনো বাঁধের গোড়ার মাটি কেটে সেই মাটি নতুন বাঁধে দেওয়ার মানে হলো টাকার হরিলুট। এভাবে বাঁধ সংস্কার করা হলে তা কৃষকের কোনো কাজেই আসবে না। ফসল রক্ষা তো হবেই না, বরং পুরোনো বাঁধ আরও দুর্বল হয়ে যাবে। এমনকি আগামী বর্ষা মৌসুমে এটি ভেঙে পড়ার আশঙ্কাও রয়েছে। তুঘলকি এমন কা- ঘটছে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলাধীন বদলপুর ইউনিয়নের উদয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)-এর ফসল রক্ষা বাঁধের সংস্কার কাজে। ইতিমধ্যে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এই সংস্কার কাজ নিয়ে।

বাঁধ সংস্কারে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা হলেও স্থানীয়রা জানেন না আসলে এখানে ঠিক কী কাজ হচ্ছে! এমনকি খোদ কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিবও জানেন না কত মিটার বাঁধের সংস্কার হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, বাঁধ সংস্কারেও কত টাকা ব্যয় হবে তা-ও জানেন না তিনি। কমিটির সদস্য সচিব বলছেন, কমিটিতে থাকলেও তারা স্থানীয় ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে কাজ করছেন। অন্যদিকে ইউপি সদস্যদের দাবি, বাঁধ সংস্কার কমিটির সভাপতি ও সদস্য সচিবই সবকিছু করছেন। এভাবে একে অন্যের ওপর পাল্টাপাল্টি দায় চাপাচ্ছেন তারা।  

উদয়পুর বাঁধের পিআইসি কমিটির সভাপতি নরেশ চন্দ্র্র দাস ও সদস্য সচিব গোপেশ চন্দ্র দাস বলেন, আমরা স্থানীয় ইউপি সদস্য অরুণ কুমার তালুকদারকে দিয়ে কাজ করাচ্ছি। কত মিটার বাঁধের কাজ হচ্ছে তা আমরা জানি না। অন্যদিকে ইউপি সদস্য অরুণ কুমার তালুকদারের দাবি, তিনি কাজ করছেন না। পিআইসি কমিটির লোকজনই কাজ করছেন।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর আজমিরীগঞ্জ উপজেলার ৯টি পিআইসি গঠনের মাধ্যমে ১২.৫৫ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ। এর প্রস্তাবিত বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৯০ লাখ ৮২ হাজার টাকা। 

বদলপুর ইউনিয়নের উদয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন বাঁধে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধ সংস্কারের কাজ চললেও টাঙানো হয়নি কোনো সাইনবোর্ড। সেখানে পাওয়া যায়নি দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা কিংবা পিআইসি কমিটির সভাপতি বা সদস্য সচিবের নাম। হাওরের ফসল রক্ষা নীতিমালা অনুযায়ী, ৫০ মিটার (১৬৭ ফুট) দূর থেকে মাটি তোলার কথা থাকলেও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি এই নিয়ম মানছে না। তারা বাঁধের মাত্র ৮-১০ মিটার দূর থেকেই মাটি তুলছেন। 

সরেজমিন আলাপকালে এক ভেকুচালক জানান, বাঁধের কাজ করার জন্য তাদের নিয়ে এসেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য অরুণ তালুকদার। এ সময় দেখা যায়, বাঁধের সংস্কার কাজে বাঁধের গোড়ার মাটি কেটে বাঁধেই সেই মাটি ফেলা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা বলেন, বাঁধের গোড়া কেটে যদি বাঁধ মেরামত করা হয় তবে সেই বাঁধের কী দরকার? কাজের পূর্ণ বিবরণী সাইনবোর্ড টাঙানোর কথা থাকলেও সেখানে কোনো ধরনের সাইনবোর্ড টাঙানো হয়নি। আমরা এই কাজ নিয়ে সংশয়ে আছি।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) হবিগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম হাসনাইন মাহমুদ বলেন, বাঁধ সংস্কারে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তাছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি গঠনে অনিয়ম হয়ে থাকলে আমরা সরেজমিন গিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সময়ের আলো/জেডআই




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close