ই-পেপার রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪
রোববার ৬ অক্টোবর ২০২৪

মিয়ানমারে উত্তাপে উখিয়া সীমান্তে ৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা
মিয়ানমার বাহিনীর ঘাঁটি দখলের দাবি
প্রকাশ: সোমবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৪, ৮:৩০ পিএম  (ভিজিট : ৫৫০)
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় সংঘাত-সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। আকাশ পথ ও স্থলপথে ওইপারের দুই পক্ষের গোলাগুলিতে বাংলাদেশ সীমান্তে কোনও হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তে এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পরেছে। ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত এলাকায় স্কুল ও মাদ্রসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এরমধ্যে দুটি উচ্চ বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা ও ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রি রতন চাকমার আবেদনের প্রেক্ষিতে নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্তের কাছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো একদিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। স্কুলগুলো হল, বাইশ ফাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রেজু গর্জন বুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় ও মিশকাতুন্নবী মাদ্রাসা বন্ধ করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো একেবারে সীমান্ত ঘেষা হওয়ায় এগুলো বন্ধ করা হয়েছে বলে প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে।

এদিন সরেজমিনে সীমান্ত এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মিয়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরে আরকান আর্মি, আরএসও বিদ্রোহী গোষ্ঠী সাথে মিয়ানমার জান্তা সরকারের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি ও কামানের গোলার শব্দ পাওয়া যায়। ওপার থেকে ছোড়া গুলি ও মর্টাল এপারে এস পরায় সীমান্তে আশেপাশে বসবাসরত লোকজন ও স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পরে।

স্থানীয় সংবাদকর্মী নুর মোহাম্মদ সিকদার জানান, মিয়ানমার-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ঘেষে মিয়ানমার অংশে ৩ দিনে ৩০/৩৫টির অধিক মর্টার শেলের প্রকট শব্দে ৪৭ ও ৪৮ নম্বর সীমান্ত পিলারের বাংলাদেশের অভ্যন্তর এসব গোলার আওয়াজে কেঁপে উঠে। আর এ কাঁপুনিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সীমান্তে বসবাসরত স্থানীয় এলাকাবাসী।

তুমব্রু সীমান্তের স্থানীয় বাসিন্দা সোলতান আহম্মদ বলেন, কিছু দিন ধরে সীমান্তের ওপারে ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে, আমরা যারা স্থায়ী বাসিন্দা আছি, সবাই খুব আতঙ্কে রয়েছি। তবে সীমান্তে বসবাসকারী অনেকেই ভয়ে নিরাপদে চলে গেছেন। এর আগে শনিবার সারারাত গোলাগুলি হয়।

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, এখানে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও সীমান্ত এলাকার মানুষ ও বোমার আওয়াজে আতঙ্কে রয়েছে। সোমবার সকাল থেকে ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়।

ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভুট্রো বলেন, আমরা যারা এপারে বসবাস করছি সবাই আতঙ্কে আছি, কখন কোন সময় কি হয় জানি না। বিনা প্রয়োজনে ঘরের বাইরে না যাওয়ার জন্য স্থানীয় জনগণকে সতর্ক করা হচ্ছে।

বান্দরবান জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফরিদুল আলম হোসাইনী বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার কারণে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা ক্রমে ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয় এবং মিশকাতুন্নবী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাকারিয়া বলেন, ওপারে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের কারণে এপারে গুলির আওয়াজে স্থানীয়দের কিছু সমস্যা হচ্ছে। এগুলো আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। সীমান্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ গোয়েন্দা সংস্থা এবং সংশ্লিষ্টরা তৎপর রয়েছে যাতে আমাদের এপাশে যেন কোন সমস্যা না হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, যারা সীমান্তে বসবাস করছে তাদের বিরূপ কোন রিপোর্ট আসেনি। আমরা প্রতিনিয়ত খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি কোন সমস্যা হয় তাহলে চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে মানুষকে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে। এরকম প্রস্তুতি আমাদের আছে।

মিয়ানমার বাহিনীর ঘাঁটি দখলের দাবি : রোববার রাতে থাইল্যান্ডে নির্বাসিত মিয়ানমারের একদল নাগরিক পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়, আরাকান আর্মি রোববার রাখাইন রাজ্যের মিনবিয়া শহরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৩৮০ ব্যাটালিয়নের সদর দফতর দখলে নিয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, রাখাইনের ম্রাউক ইউ, কিউকটা ও রাথেডং এলাকায় দুই পক্ষের লড়াই চলছে। 
আরাকান আর্মির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জান্তার আর আমাদের সঙ্গে লড়াই করার সামর্থ্য নেই। তারা এখন আরও বেশি গোলা নিক্ষেপ ও আকাশ থেকে বোমা হামলা চালাচ্ছে।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close