নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গত শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) উদ্ধার হওয়া নিহত মামুনুর রশীদ মামুন (১৮) নামে এক অটোরিকশা চালকের খুনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ বলছে, গাজা সেবনের সময় কথা কাটাকাটির জের ধরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে এবং লাশ উদ্ধার হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ক্লুলেস এ হত্যাকাণ্ডের আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার মো. সোহাগ (২২) উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ দোয়ালিয়া গ্রামের বদিউর জামানের ছেলে। সেও পেশায় একজন অটোরিকশা চালক।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয়া সেন।
এর আগে, গত শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাদধসিংহ গ্রামের গাজী আলাউদ্দিনের ঘরের পেছনের সুপারি বাগান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত মামুনুর রশীদ মামুন উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাকীপুর গ্রামের দেওয়ান বাড়ির কবির হোসেনের ছেলে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়, ভিকটিম মামুন নিখোঁজের পর থেকে আত্মগোপনে চলে যায় ঘাতক সোহাগ। পরবর্তীতে জেলার সুবর্ণচর উপজেলা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এক বছর পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামি সোহাগ অটোরিকশা চালানোর সময় খুন হওয়া আরেক অটোরিকশা চালক মামুনের সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর থেকে তারা একসাথে বিভিন্ন সময় গাঁজা সেবন করত। ঘটনার দিন গত ২২ জানুয়ারি এশার নামাজের পর সোহাগ ভিকটিম মামুনকে মোবাইলে কল দিয়ে গাঁজা সেবনের বিষয়ে জানায়। কিছুক্ষণ পরে মামুন ফোন করে গাঁজা কেনার কথা জানিয়ে সোহাগকে সিগারেট নিয়ে ঘটনাস্থল মাধবসিংহ গ্রামের গাজী আলাউদ্দিনের বাড়ির পশ্চিমে সুপারি বাগানে আসার জন্য বলে।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ আরও জানায়, আসামি ভিকটিমের কথা অনুযায়ী সিগারেট নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামি ও নিহত ভিকটিম দু’জনে মিলে দুই সিগারেট গাঁজা সেবন করে। একপর্যায়ে দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি ঘটনা ঘটে। হাতাহাতির সময় সোহাগ ইট দিয়ে মামুনের মাথায় আঘাত করে এবং অণ্ডকোষে লাথি মারে। এতে মামুন মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। আসামি সোহাগ ইটটি ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী পুকুরে ফেলে পালিয়ে যায়। পুলিশ পরবর্তীতে আসামির দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে আসামিকে সাথে নিয়ে তার ভাষ্যমতে ঘটনাস্থলের পাশের পুকুর থেকে ইট ও ভিকটিমের পরিহিত স্যান্ডেল জব্দ করে। আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হলে সে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।