দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৩ (আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য এবং আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অজয় কুমার সরকার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন। ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের আরেক স্বতন্ত্র উপজেলা আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক খাঁন মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী বাঁধনের সাথে লড়াই করে তিনি পরাজিত হন। নির্বাচনে পরাজয় বরণ হলেও তিনি পরের দিন থেকেই বিভিন্ন এলাকায় বিরতিহীন ভাবে ছুটে বেড়াচ্ছেন। এখনো যেন আগের মতোই ঘুরছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। একারণেই সাধারণ মানুষের মাঝে এখন একটায় প্রশ্ন। ভোটে পরাজিত, তবুও কেন প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে অজয়?
জানতে চাইলে বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে অজয় কুমার সরকার বলেন, ভোটে হারলেও আমার প্রতি মানুষের ভালোবাসা ও আস্থা যেন হারিয়ে না যায় একারণেই আমি ভোট পরবর্তী সময়েও প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সান্ত্বনা ও কুশল বিনিময় করছি। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। মানুষের জন্য কিছু করতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকেই এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া। মানুষ আমাকেই চেয়েছিল। এজন্য মানুষের আপদে-বিপদে সব সময়ই পাশে থাকা উচিৎ আমার। চিন্তা করেছি যতদিন বাঁচবো ততদিন মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো।
ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে হাতেখড়ি জানিয়ে তিনি আরো বলেন, তখন আমি ছাত্রলীগ করি। ১৯৯৯ সালে ১৬ই নভেম্বরে গভীর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী হলে ইসলামী ছাত্রশিবির কর্তৃক নির্মম নির্যাতনের শিকার হই। নির্যাতনে হাত, পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে ফেলে ও অণ্ডকোষে (টেস্টিস) রাইফেলের বাঁট দিয়ে আঘাতের ফলে মাটিতে পড়ে থাকলে আমাকে মৃত মনে করে ঘরে তালাবন্ধ করে পালিয়ে যায়। তারপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে অনেক চিকিৎসার পর বেঁচে উঠি।
শুধু তাই নয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দুই দিন আগে ২৮শে সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থী মেজর জেনারেল গোলাম মওলার পক্ষে নির্বাচনী জনসভায় জামাত-শিবির বিরোধী বক্তব্য দেয়ায় সন্ত্রাসীরা আমার বাড়িতে সশস্ত্র হামলা চালায়। ফলে ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয় এবং আমার বাবার ব্রেইন স্টোক হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নির্মম হলেও সত্য মামলা-হামলা, জঙ্গি ও বাংলা ভাইয়ের হত্যার হুমকিতে পলাতক থাকায় বাবাকে সমাধিস্থ করতে পারিনি। তার পরেও দলীয় কর্মকাণ্ড ও আন্দোলনে সাহসী ভূমিকা পালন করেছি।
দলের পক্ষে কাজ করতে গিয়ে আমি ইতিপূর্বে বারবার হামলা-মামলা ও নানান নির্যাতনের শিকার হয়েছি। সেই তুলনায় নির্বাচন করতে এসে তেমন একটা লাঞ্ছনা বা নির্যাতনের শিকার হতে হয়নি। তবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। যে কারণে আমি পরাজয় বরণ করতে বাধ্য হয়েছি। তবে পরিশেষে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন এবং শেখ হাসিনা পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ায় আমার সব দু:খ-কষ্ট লাঘব হয়েছে।