ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

হাড় কাঁপানো মাঘের শীতে জবুথবু গাইবান্ধার জনজীবন
প্রকাশ: বুধবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪, ৫:৪৯ পিএম  (ভিজিট : ৬৭৪)
শহর থেকে গ্রাম, সর্বত্র ছবিটা একই। হাঁড় কাপানো মাঘের শীতে জবুথবু গাইবান্ধার মানুষ। সপ্তাহ জুড়ে সূর্যের দেখা নেই উত্তরের জেলা গাইবান্ধায়। ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া কনকনে ঠাণ্ডায় গরম পোশাক, টুপি, মোজা, জ্যাকেট, চাদর, সোয়েটার পরেও জবুথবু এখানকার শহর-গ্রামের মানুষজনেরা। কয়েকদিন ধরেই গাইবান্ধায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২-১৩ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। কখনো কখনো দুপুরের দিকে হালকা রোদের দেখা মিললেও, সকালে এবং সন্ধ্যার পর থেকে হাড় কাঁপানো শীত অনুভব হচ্ছে জেলা জুড়েই।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এদিন সকালে সর্বনিম্ন ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পৌষের শুরুতে সকাল আর সন্ধ্যায় হালকা কুয়াশা, দুপুরে কড়া রোদ, কখনো একটু-আধটু হিমেল হাওয়া থাকলেও মধ্য পৌষ থেকে বদলে যেতে শুরু করে দৃশ্যপট। পৌষ মাস হাজির হয় আপন বৈশিষ্ট্যে। বেলা গড়ালেই বাড়তে থাকে কুয়াশা, পুরো সকাল জুড়ে থাকে সেই দাপট। শীতল হাওয়ায় দুপুরেও তেজহীন সূর্য। কারও কাছে এটি হয়ে ওঠে উপভোগ্য, আবার কারও কাছে দুর্বিষহ। তবে গত সাতদিনে সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে হামা দিয়ে এসেছে ‘বাঘ পালানো’ মাঘের শীত।

এদিন সকালে শীত উপেক্ষা করে গায়ে গরম জ্যাকেট, গলায় উলের মাফলার জড়িয়ে গাইবান্ধা শহরের পুরাতন বাজারে এসেছেন চাকরিজীবী আলী হোসেন। শীতের সবজি ও মাছ কেনা শেষে কিনলেন খেজুরের গুড়। তিনি বলেন, শীত মানেই তো পিঠাপুলির সময়। শীতের সকালে পরিবারের সবাইকে নিয়ে পিঠা খাওয়ার আনন্দই অন্য রকম। বাজারের ব্যাগ নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশায় চড়ে বসলেন তিনি। রিকশাচালক এক কিশোর। গায়ে জরাজীর্ণ শীতের পোশাক থাকলেও ঠাণ্ডায় কালচে মুখ। শীতের কাঁপুনিও শরীরে স্পষ্ট। জানা গেল তার নাম বিপ্লব মিয়া। বয়স ১৮-১৯ বছর। বাড়ি সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুরে। তার কাছে শীত কষ্টের। বিপ্লব বলেন, ‘গরমই ভালা, শীতে কষ্ট লাগে।’

অনেকটা বিপ্লবের মতো অবস্থা মধ্যবয়সী জাহিদুল হকের। তিনদিন পর রিকশা নিয়ে বের হয়েছেন তিনি। হাঁড় কাপানো শীতে ব্যাটারি রিকশায় যাত্রী ওঠেনা, তাই যাত্রী সংকটে গত তিনদিন রিকশা চালাননি। তিনি বলেন, শীতের রাত কাটানোই কষ্টের। কয়েকদিন থেকে আগুনের পাশে বসে থেকেই রাত কাটাচ্ছি।

শীতের এমন চিত্র দেখা গেছে বাজার, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল, শহরের প্রধান সড়কগুলোর ফুটপাতসহ গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায়। এসব এলাকায় শীতে অনেককেই গোল হয়ে কাগজ-খড়কুটো পুড়িয়ে উষ্ণতা নিতে দেখা গেছে। আবার পাতলা চাদর মুড়ি দিয়ে ফুটপাতে শুয়েও কাটিয়েছেন অনেকে।

শীতের নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট সীমাহীন হলেও হাসি ফুটেছে দোকানিদের। স্টেশন রোডের একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, গত সাত দিন থেকে শীত বাড়ায় শীতের কাপড় বিক্রি বেড়েছে। সেই সঙ্গে দামও কিছুটা বেড়েছে বলে স্বীকার করেছেন তারা। অন্যদিকে শীতের আমেজ উপভোগ করতে এবং আনন্দ উপভোগ করতে জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্থানগুলোতে ভীড় বেড়েছে পর্যটকদের।

জেলার চরাঞ্চলগুলোতে প্রবল ঠাণ্ডায় নাজেহাল প্রায় সব মানুষই। কুয়াশার চাদরে ঢেকেছে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার চর-দ্বীপচরগুলো। চরের সব জায়গায় সন্ধ্যা থেকেই ঘন কুয়াশা পড়তে শুরু করে। কুয়াশার দাপট এতটাই যে কিছুটা দূরের জিনিসপত্রও দৃশ্যমান হয় না। ফলে নৌ-যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। স্থবির হয়ে পড়েছে নদী কেন্দ্রিক মানুষের জীবনযাত্রা। এদিকে শহর-গ্রামের সড়কে সকালের গাড়িগুলির বেশিরভাগকেই লাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে। শীত থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই গরম চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন। প্রয়োজন ছাড়া রাস্তাঘাটে সেভাবে কাউকে বের হতে দেখা যাচ্ছেনা।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  মাঘের শীত   জবুথবু গাইবান্ধার মানুষ   শীত উপভোগ্য নয়  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close