কুড়িগ্রামে টানা পাঁচ দিন থেকে মিলছে না সূর্যের দেখা। শীতের তীব্রতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দিনের তাপমাত্রা উঠা নামা করলেও শীতের তীব্রতা কমে নাই। শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষজন। ঘন কুয়াশায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া খুব একটা লোকজন ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিস জানায়, রোববার (১৪ জানুয়ারি) সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
গত ১৫ দিন থেকে এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রী থেকে ১৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। দিনের অধিকাংশ সময় আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় সূর্যের উত্তাপ ছড়াতে না পারায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাহিল হয়েছে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের হাজার হাজার মানুষ। শীত ও ঠাণ্ডার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাসপাতালে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা। আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্কারা।
এদিকে ঠাণ্ডায় হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩১ জন শিশু। সবমিলিয়ে হাসপাতালটিতে ৭২ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ডাইরিয়া ওয়ার্ডের ১২ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছে ৫৭ জন শিশু।
জেলা সদরের হলোখানা ইউনিয়নের চর হরইকএশ এলাকার রিকশা শ্রমিক শমশের আলী জানান, ঘন কুয়াশায় আর প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় রিকশা নিয়া বের হওয়া যাচ্ছে না। হাত পা বরফ হয়ে যায়। রাতে ও সকালে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে। আমরা যারা দিন করে দিন খাই, তারা সবাই কষ্টে আছি।
একই এলাকার দিনমজুর হোসেন আলী বলেন, খুব ঠাণ্ডা কাজ করতে পারছি না। খুব একটা সমস্যাতে পড়ি গেছি ঠাণ্ডা জন্য। একদিন কাজ হয় তা, আর একদিন নাই। রাত ও সকালে বৃষ্টির মতো কুয়াশা পড়ছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, তাপমাত্রা আরও ২ থেকে ৩ দিন এমন থাকবে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে এ মাসে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, এ জেলাটি হিমালয়ের কাছে অবস্থান হওয়ায় এখানে ঠাণ্ডার প্রকোপটা একটু বেশি। হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিতে আসছেন অধিকাংশই চরাঞ্চলের মানুষ।
সময়ের আলো/আরআই