ই-পেপার সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪
সোমবার ৭ অক্টোবর ২০২৪

তীব্র শীতে মেহেরপুরের জনজীবন বিপর্যস্ত
‘শীতের পোশাক খোলার সাহসই পাইনি, কাজ করব কখন’
প্রকাশ: শুক্রবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৪, ৮:৩৭ পিএম আপডেট: ১২.০১.২০২৪ ৮:৩৯ পিএম  (ভিজিট : ১২৫৭)
মেহেরপুরের বেড়েছে শীতের তীব্রতা। এতে বিপাকে পড়েছেন এ জেলার খেটে খাওয়া মানুষ। একদিকে শৈত্য প্রবাহ অন্যদিকে ঘন কুয়াশার ফলে অসুবিধায় পড়েছেন দিনমজুর, যানবাহন চালক ও পথচারীরা। পৌষের শুরুতেও ছিল না শীতের তীব্রতা। মাঝামাঝি সময়ে শীতের তীব্রতা বাড়লেও গত দুদিনে শুরু হয়েছে হাড় কাঁপানো শীত। শীতবস্ত্রের অভাবে কাবু হয়ে পড়ছেন অনেক অসহায় ও দরিদ্র পরিবারের শিশু-বৃদ্ধরা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টাও করছেন তারা। শীতে গবাদিপশু নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে খামারিদের। এ ধরনের শীত আরো কয়েকদিন থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।

বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল থেকে আজ (শুক্রবার) বিকেল ৪টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি। প্রচণ্ড শীত ও কুয়াশার কারণে খেটে খাওয়া মানুষের কষ্টের শেষ নেই। কনকনে শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকেই। তবুও পেটের তাগিদে কাউকে রিকশা, ভ্যান বা ক্ষেত খামারে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে দেখা গেছে। অনেকই শীত নিবারণের জন্য খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছেন।

ধানখোলা গ্রামের দিনমজুর জহুরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন সকালে ইটভাটায় কাজে যেতে হয় যতই কুয়াশা বা শীত পড়ুক না কেন। কারণ কাজ করলে মুখে ভাত উঠবে। ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া করে, তাদের খরচ জোগাতে হয়।

গাংনী উপজেলার হাড়াভাঙ্গা গ্রামের জুরাইস ইসলাম জানান, সকাল বেলা শীতের পোশাক খুলতেই দুপুর ১২টা বেজে যাচ্ছে। আর আজতো শীতের পোশাক খোলার সাহসই পাইনি, কাজ করব কখন।  

মেহেরপুর শহরের অটো চালক বিদ্যুৎ হোসেন বলেন, প্রচণ্ড শীতে লোকজন বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। তাই যাত্রী সংকটে ভাড়াও হচ্ছে না। সারাদিন গাড়ি চালিয়ে ২/৩শ টাকা নিয়ে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। এদিকে অটো চালাতে গিয়ে হাত-পা ঠাণ্ডায় শক্ত হয়ে যাচ্ছে।

পাখি ভ্যান চালক ফজলু মিয়া জানান, শীত লাগলেও কিছু করার নেই। পরিবারের লোকজনদের দু’মুঠো ভাতের ব্যবস্থা করতে হলে কষ্ট করতেই হবে।

গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, ঘন কুয়াশা আর প্রচণ্ড শীতে জবুথবু হয়ে পড়ছে খেটে খাওয়া মানুষগুলো। আর এই ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলার যত্ন নিতে হবে। আর ধানের চারার যাতে ক্ষতি না হয় সে জন্য সকালেই চারার মাথার শিশিরগুলো ফেলে দিতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, আজ (শুক্রবার) সকাল ৯টায় মেহেরপুরের তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৪ শতাংশ। দুপুরের সূর্যের দেখা মেলার কথা থাকলেও তা দেখ যায়নি। তবে আগামী কয়েকদিন জেলায় শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আব্দুল আল মারুফ জানান, প্রচণ্ড শীতে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা কাবু হয়ে পড়েছেন। হাসপাতালে এখন বেশি রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। দেখা দিয়ে হাছি সর্দি কাশি ও হাপানী রোগ। শীত জনিত রোগ ডাইরিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি। শিশুদেরকে গরম পোশাক পরিধানের  পাশাপাশি ঘরের বাইরে না বের হওয়ার পরামর্শ দিলেন এই চিকিৎসক।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, নির্বাচনের কয়েকদিন আগে কম্বল এসেছিলো কিন্তু নির্বাচনের কারণে শীতের কম্বল বিতরণ বন্ধ ছিলো। নির্বাচনের পর থেকেই রাতের আধারেও বিভিন্ন গ্রামের অসহায় মানুষের বাড়ি বাড়ি কম্বল পৌঁছে দিচ্ছি।

সময়ের আলো/আরআই


আরও সংবাদ   বিষয়:  শীতের তীব্রতা   মেহেরপুরের জনজীবন বিপর্যস্ত  




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close