হবিগঞ্জে হিমেল হাওয়া আর কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত। বিশেষ করে দিনমজুর মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। গত তিন দিনের সূর্যের আলো কোথাও দেখা যায়নি। কুয়াশার চাদরে টাকা পুরো জেলা। দিনের বেলা যানবাহনগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যায়। অপরদিকে অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছর শীত বস্ত্র বিতরণের তেমন কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। যার কারণে খেটে খাওয়া মানুষ খড়খোটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে হবিগঞ্জ টু লাখাই, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ সড়কসহ আঞ্চলিক সড়কে ঘন কুয়াশার কারণে যানবাহনে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়।
অন্যদিকে হাসপাতাল গুলোতে বাড়ছে ঠান্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা। জেলা সদর হাসপাতালের শিশু ইউনিটে তিল পরিমাণ ঠাই৷ নেই। চিকিৎসা সেবা দিতে ডাক্তাররা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। হাসপাতালের মেঝে বারান্দাসহ সব জায়গায় ঠান্ডাজনিত সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া নিয়ে রোগীরা শুয়ে আছেন। সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মিঠুন রায় বলেন, কনকনে শীতের কারণে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তবে আমরা আমাদের সাধ্যমত সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
জেলা পরিষদের সামনে কাগজে আগুন ধরিয়ে হাত গরম করতে করতে ৬০উর্ধব রিকশাচালক তপু মিয়া বলেন- ঠান্ডায় হাত-পা বসে গেছে, রিক্সা চালাতে পারছি না। মাত্র ২০ টাকা রুজি করেছি, বউ ছেলে মেয়ে মিলে আমার ৫জনের সংসার। যেভাবে হোক বিকেলে চাল ডাল নিয়ে বাসায় ফিরতে হবে। সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত কোন সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। বাইপাস সড়কে ঝুপড়ি ঘরে ছেলে মেয়েকে নিয়ে থাকি। গত বছর ডিসি সাহেব একটি কম্বল দিয়েছিলেন, এবছর কেউ একটি কম্বলও দেয় নাই।
শহরের মোতালেব চত্বরে কোটাল নিয়ে সাত্তার মিয়াসহ কয়েকজন বসে আছেন। তারা জানান- সকাল থেকে দুপুর হয়ে গেছে, এখন পর্যন্ত কেউ আমাদেরকে কাজের জন্য ডাকে নাই। আজ মনে হয় খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হবে। গতকাল আমি মাত্র ৩শ টাকা রুজি করেছি। প্রতিদিনই দোকানে বাকীর খাতা লম্বা হচ্ছে। এভাবে ঠান্ডা আরো কয়েক দিন চলতে থাকলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। অন্যান্য বছর অনেকে সাহায্য সহযোগিতা করেছে এ বছর কেউ আসে নাই।
সময়ের আলো/এএ/