ই-পেপার রবিবার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
রবিবার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪
ই-পেপার

রবিবার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

বিআইডিএসের সম্মেলন
সরকারি কর্মচারিদের বেতন বাড়ায় দারিদ্র বেড়েছিল
মজুরি বেড়ে গেলে দারিদ্র্যসীমা ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায় ।। স্থানীয় সরকারের ইউনিট খণ্ডিত করা হলে প্রাথমিকভাবে দারিদ্র্য কিছুটা কমতে পারে
প্রকাশ: শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৩, ৯:৫১ পিএম  (ভিজিট : ৪৩০)
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন বাড়ানোর ফলে ২০১৫ সালে বেসরকারি খাতের কম বেতনের অনেক কর্মী সাময়িক সময়ের জন্য দারিদ্র সীমার নিচে চলে গিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ইফপ্রির অর্থনীতিবিদ মো. আল-হাসান। তিনি জানান, সবার মজুরি সমানভাবে বাড়ে না। সে জন্য এই সীমা ১০ শতাংশ বেড়ে গেলে দারিদ্র্য ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।

শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) শীতকালীন অর্থনৈতিক সম্মেলনে এ প্রাথমিক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন তিনি। দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে দারিদ্র্য, অসমতা ও প্রবৃদ্ধিবিষয়ক তিনটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়। এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ইস্ট-ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এ কে এনামুল হক।

গবেষণাটি উপস্থাপনকালে আল হাসান বলেন, বেতন বাড়ানোর ফলে দারিদ্র বাড়ানো সরকারের উদ্দেশ্য না হলেও বেসরকারি খাতের স্বল্প দক্ষতাসম্পন্ন অনেক কর্মী সাময়িকভাবে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গিয়েছিলেন। শুধু সরকারি কর্মচারিদের বেতন বাড়লেও বর্ধিত দ্রব্যমূল্যের চাপ সবার ওপরেই পড়ে। কিন্তু বেসরকারি খাতের স্বল্প দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের মজুরি বৃদ্ধির হার কম বলে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জেরে সে সময় এই কর্মীদের অনেকে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যখন জাতীয় বাজেট প্রস্তাব করা হয় এবং সরকারি কর্মচারিদের বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব আসে, তখন সামগ্রিকভাবে পণ্যমূল্য বেশ দ্রুততার সঙ্গে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যায়।

দেখা যায়, সরকারি কর্মচারিদের বেতন বাড়ছে এমন খবর আসামাত্র দ্রুতগতিতে বাজারে পণ্যমূল্য বেড়ে যায়। আবার বেতন বৃদ্ধির খবরের সঙ্গে যদি বাজেট প্রস্তাবের সময় চলে আসে, তাহলে পণ্যমূল্য আরও বেড়ে যায়।

তবে ইফপ্রির এই গবেষক জানান, এ গবেষণার ফলাফল এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। ২০১০ থেকে ২০১৬-১৭ সালের মধ্যে দেশের বেসরকারি খাতের সবচেয়ে দক্ষ কর্মীদের মজুরি বেড়েছে ১৪০ শতাংশ, কিন্তু স্বল্প দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের মজুরি বেড়েছে ৯০ শতাংশ। এর বিপরীতে দেশের সরকারি কর্মচারিদের মজুরি একই সময়ে বেড়েছে ১৩০ থেকে ১৫৫ শতাংশ।

উপস্থাপনায় বলা হয়, বাজারে উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের সরবরাহ কম থাকায় তারা নিজেদের মজুরি বাড়িয়ে নিতে পারেন, কিন্তু স্বল্প দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের সরবরাহ বেশি থাকায় তাদের মজুরি তেমন একটা বাড়ে না।

এ সম্মেলন বিআইডিএস, বাংলাদেশ ইকোনমিক রিসার্চ নেটওয়ার্ক ও অ্যাসোসিয়েশন ফর ইকোনমিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিস অন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছে।

বিআইডিএসের গবেষক কাজী ইকবাল বলেন, বেতন বৃদ্ধির আগে থেকেই একধরনের ধারণা থাকে যে বাজারে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে। তখন মানুষ নিজে থেকেই মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে দেন। সে জন্য প্রত্যাশিত মূল্যবৃদ্ধি ও অপ্রত্যাশিত মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব পৃথকভাবে করা গেলে ভালো হয় বলে তিনি মত দেন।

জবাবে গবেষক মো. আল-হাসান বলেন, এ গবেষণায় সব ধরনের কর্মীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাদের মজুরি ২০১০ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রশাসনিক কর্মী বা কারখানার শ্রমিকদের আলাদা করা হয়নি। তবে দারিদ্র্য বাড়ার বিষয়টি সাময়িক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রথম অধিবেশনের প্রথম গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আমিন মাসুদ আলী। ‘স্থানীয় সরকারের ইউনিট খণ্ডিত করা হলে কি দারিদ্র্য বিমোচন হয়’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে তিনি বলেন, বাংলাদেশে স্থানীয় সরকার ইউনিট খণ্ডিত করার কারণে দারিদ্র্যে কী প্রভাব পড়ে, তা নিয়ে গবেষণা হয়নি। সেই বাস্তবতা থেকে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে, এর ফল কী হয়। স্থানীয় সরকারের ইউনিট খণ্ডিত করা হলে প্রাথমিকভাবে দারিদ্র্য কিছুটা কমতে পারে, কিন্তু খণ্ডিতকরণ নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে পরবর্তীকালে দারিদ্র্য আবার কিছুটা বাড়তে পারে।

প্রথম অধিবেশনে তৃতীয় গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আহমেদ সাদেক ইউসুফ। তার গবেষণাপত্রের শিরোনাম ছিল ‘থ্রি সিগন্যাল মডেল ব্যবহার করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পরিমাপ’।

সময়ের আলো/জিকে




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : সৈয়দ শাহনেওয়াজ করিম, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ। নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।
ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close