নওগাঁয় ঝুঁকিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, আতঙ্কে দুই শতাধিক গ্রামবাসী
নওগাঁ প্রতিনিধি
|
![]() নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, রক্তদহ লোহাচুড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৩৫.০০ কিলো মিটার, নওগাঁ পোল্ডার-১ উপ-প্রকল্প ৬৬.৫৭ কি. মি, পোল্ড সি প্রকল্প ৫৮.০০ কি. মি, পোল্ডার ডি প্রকল্প ৫৫.০০ কি. মি, আপার নাগর ভ্যালী উপ-প্রকল্প ২৫.৫৫ কি. মি, নাগর ভ্যালী উপ-প্রকল্প ৫৮.০০ কি. মি, সিলিমপুর ছালিগ্রাম ১০.২৭ কি. মি, পত্নীতলা উপ-প্রকল্প ২৬.১০ কি. মি, বদলগাছী বন্যা নিয়ন্ত্রণ উপ-প্রকল্প ৩৭.৫০ কি. মি, তুলসীগঙ্গা উপ-প্রকল্প ৪৩.৫০ কি. মি, তুলসীগঙ্গা বামতীর বাঁধ নির্মাণ উপ-প্রকল্প ১৪.০৩১ কি. মি, আত্রাই নদীর ডানতীর ৫১.৩০ কি. মি, ও জবাই বিল ১৪.৩০ কি. মি. মোট ৪৯৫.৩৭ কিলো মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। এর মধ্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৭০,৬৬৮ কিলোমিটার। এ বছর বর্ষা মৌসুমের পূর্বে মেরামত করা হয়েছে ৪ কিলো মিটার। ![]() তবে সম্প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি পরিদর্শন করেছে রাণীনগর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্তৃপক্ষকে দ্রুত অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অংশগুলো মেরামত করার জন্য ইতোমধ্যই মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। এছাড়াও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কেও লিখিত ভাবে জানানো হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন। গোনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বলেন, যখন থেকে বাঁধটি ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে তখন থেকে আমরা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত স্থায়ী কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। শুধু বস্তা ভর্তি আশ্বাসই পেয়ে যাচ্ছি। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটি নতুন করে স্থায়ীভাবে মেরামত করার কোনো পদক্ষেপই গ্রহণ করা হচ্ছে না। সরকার যেখানে দেশের প্রতিটি বাঁধের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে আর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে সামান্য এই বাঁধটি মেরামত করার জন্য কোনো অর্থই পাওয়া যাচ্ছে না। এটি এই অঞ্চলের মানুষদের জন্য অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খান বলেন, নওগাঁয় ছোট বড় ছয়টি নদ-নদী রয়েছে। ১৯৭১ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে এসব নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণের পরে আজ পর্যন্ত এ নদ-নদী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে বড় ধরনের কোনো সংস্কার করা হয়নি। এসব বাঁধ পূর্বের অবস্থানে নেই কিংবা দেবে গেছে এই কারণে আমরা এই সব বাঁধকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৪৯৫.৩৭ কিলো মিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের মধ্যে ৭০ কিলো মিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। চলতি বর্ষা মৌসুমে ৪ কিলো মিটার বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে। বাকি বাঁধ সংস্কারের জন্য আমার উপর মহলে চিঠি দিয়েছি। বরাদ্দ আসলে আমরা সংস্কার করবো। তিনি বলেন, বন্যা কালিন সময়ে যেসব বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে সেসব বাঁধ রক্ষার্থে আমরা বা আমাদের অফিসের টিম সর্বক্ষণ এলাকায় তদারক করছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সাধারণ জনগণ এবং স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় থাকলে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা হবে। উত্তরের বৃহত্তর জেলা নওগাঁয় রয়েছে ছোট বড় ছয়টি নদ-নদী। ছোট যমুনা, আত্রাই, তুলসীগঙ্গা, শিব, পুর্বভবা ও নাগর। জেলার অন্যতম নদী ছোট যমুনা ও তুলসীগঙ্গায় একসময় সারা বছর পানি থাকত। আত্রাই ও পুর্বভবা এখন মরা খাল। দীর্ঘ দিন এসব নদ-নদী সংস্কার না করায় সামান্য বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা উজানের ঢলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙ্গে নদীর দুই কুল ভেসে আশেপাশের এলাকা প্লাবিত হয়। ১৯৭১ সালে বা স্বাধীনতার পূর্বে থেকে শুরু করে ২০২০ সালের মধ্যে এই সব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মাণের পর এই সব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে বড় ধরনের কোনো সংস্কার করা হয়নি। নামমাত্র সংস্কার করা হয়েছে। সংস্কার না হওয়া এসব বাঁধ এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আতঙ্কিত নদীর পাড়ের মানুষ। /আরএ
|