ই-পেপার শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪
শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

'ই-জিনিয়াস' অ্যাপের ভবিষ্যৎ কী?
প্রকাশ: বুধবার, ১৫ জুন, ২০২২, ১:০৪ পিএম  (ভিজিট : ৬৫০)
ই-জিনিয়াস। ২০২০ সালে মিডিয়ায় আলোচিত অ্যাপগুলোর মধ্যে একটি। মূলত শিশু-কিশোরদের নিয়ে ই-প্রজন্ম গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে ই-ক্যাবের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে ই-জিনিয়াস। কিন্তু এই অ্যাপস এবং ওয়েবসাইট নির্মাণসহ তিন মাসে প্রায় ২৮ লাখ টাকার বেশি খরচ হলেও মেলেনি এর কোন ফল। উল্টো এই পুরো কার্যক্রম আর কোনদিন আলোর মুখ দেখবে কিনা, তা নিয়েই দেখা দিয়েছে সংশয়।

ই-জিনিয়াস প্রজেক্টের ওয়েবসাইট এবং অ্যাপটি নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ দেখানো হয়েছে ২৮ লাখ ৪২ হাজার ৬৬১ টাকা। তবে এই অর্থ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ই-ক্যাবের একাধিক সদস্য। এদিকে ই-ক্যাবের নির্বাচনের আগ মূহুর্তে অ্যাপস নিয়ে এমন প্রশ্ন তোলাকে অন্যভাবে দেখছেন সংগঠনটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এবং ই-জিনিয়াস অ্যাপ ও ওয়েব সাইট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কম্পিউটার জগৎ টেকনোলজিসের কর্নধার আব্দুল ওয়াহেদ তমাল।

গুগল প্লেস্টোরে সার্চ দিলে মাঝে মাঝে পাওয়া যায় আবার অনেক সময় খুঁজে পাওয়া মুশকিল এই অ্যাপটি। অ্যাপসটি প্লেস্টোরে থাকলেও ডাউনলোড দিয়ে ইনস্টল করার পর আর কাজ করে না। ব্যবহারকারীর মেগাবাইট এবং সময় দুটিই নষ্ট হয়। ২০২০ সালে নির্মিত এই অ্যাপটির পাশাপাশি ছিল প্রজেক্টের একটি ওয়েবসাইটও। যার হোস্টিং কাজ করলেও সার্ভার কাজ করে না। কিন্তু ই-জিনিয়াস নামের এই প্রজেক্টের সঙ্গে ছিল ই-জিনিয়াস হান্ট (প্রতিযোগিতা) ছাড়াও ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ। ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ বানানোর মূল কারণ এডুকেশন, ই-লানিং এবং কুইজ কমপিটিশন।

কিন্তু কেনো কাজ করছে কিছু? এ বিষয়ে জানতে এই প্রকল্পের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা জুয়েল রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে এ বিষয়ে ফারিবা দিবা অ্যাপসটিকে তার নিজের বলে দাবি করতে থাকেন। আর এরপর আরো বেশ কিছু জটিলতায় কাজটি নিয়ে আর এগিয়ে যাওয়া হয়নি।

অবশ্য এই প্রকল্প নির্মাণের দায়িত্বে থাকা কম্পিউটার জগৎ টেকনোলজিসের কর্নধার আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, এটি পরিচালনা ও মেইনটেনেন্স খরচ অনেক বেশ। মূলত ফান্ডের অভাবের কারণেই এই কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

কিন্তু ই-ক্যাব এবং ঢাকা জেলার সম্পৃক্ততায় এত বড় খরচ হয়ে যাওয়ার পরও তার কোন ফলাফল নেই। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে এ বিষয়ে ই-ক্যাব কি ভাবছে জানতে চাইলে আব্দুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, কাজটি ই-ক্যাবের সদস্যদের অর্থ থেকে নিয়ে হয়নি। সুতরাং এখানে ই-ক্যাবের কোন ক্ষতি হয়েছে এমন নয়।

তবে অনেক সদস্যেই মন্তব্য করেন, ই-ক্যাব এর নামে অর্থ নিয়ে তা একটি প্রকল্পের নামে নিজের প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে কাজ করিয়ে নেয়া সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক পদে থেকে এক ধরণের 'কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট'। অনেকেই মন্তব্য করেন, তিনি সৎ মনে কাজ করলেও বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠতো। তাই এ ধরণের পদে থেকে নিজের প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে কোন কাজ করানো উচিত নয়। বিশেষত এত বড় অর্থের প্রকল্প যার কোন আউটপুট দৃশ্যত কেউই দেখতে পাচ্ছে না।

এদিকে এই অ্যাপসটি নিয়ে কাজ শুরুর পর থেকে একাধিকবার ফারাহ দিবা ফেসবুকে দাবি করে আসছেন প্রকল্পটির মূল পরিকল্পনা ছিলো তারা। কিন্তু অ্যাপস উদ্বোধনের আগে তাকে কৌশলে এই প্রকল্প থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। যদিও এ বিষয়টি প্রমাণ করা নিয়ে কোন পক্ষই তথ্য-উপাত্ত উপস্থিত করেনি।

এ ছাড়াও তৎকালীন সময় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে ই-ভ্যালির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ই-ফুড থেকে এই প্রকল্পের অর্থ গ্রহণ করা হয়। এ বিষয়টি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন অনেকে। অ্যাপস ও ওয়েবসাইট নির্মাণের খরচ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। মাত্র ৩ মাসের জন্য নির্মিত একটি অ্যাপসের পেছনে খরচ করা হয়েছে ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা, তার টেকনিক্যাল মেইনটেনেন্সের জন্য তিন মাসে খরচ দেখানো হয় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এ ছাড়াও সার্ভার খরচ দেখানো হয় ১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা যা গড়ে প্রতিমাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। প্রজেক্টে ব্যানার এবং ব্র্যান্ডিং ডিজাইনের জন্য খরচ দেখানো হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার টাকা। যার প্রতিফল খুব একটা দেখা যায়নি বলে অভিযোগ করা হয়।

এ প্রসঙ্গে ই-ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক তমাল বলেন, আসলে ২০২০ সালে অ্যাপটি তিন মাস চলার পর বন্ধ করে দেয়া হয়। কেননা এর জন্য মাসিক খরচ অনেক বেশি ছিলো। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো এটি নিয়ে সমালোচনা ২০২০ সালে বা ২০২১ সালে হয়নি, বরং হচ্ছে ২০২২ সালের জুন মাসে। বেশ স্পষ্টভাবেই বোঝা যাচ্ছে, ই-ক্যাব নির্বাচনকে সামনে রেখে এ ধরণের নেতিবাচক প্রচারণার চেষ্টা করছে কোন একটি পক্ষ।

এ সময় বিষয়টিকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানান তিনি। এবারও শমী কায়সারের সঙ্গে প্যানেল করে ই-ক্যাবের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

ই-জিনিয়াস প্রজেক্টের প্রতিযোগিতার যৌথ আয়োজনে ছিল বিভাগীয় প্রশাসন ঢাকা, ই-ক্যাব, মানবসেবা ডটকম এবং মাসিক কম্পিউটার জগৎ। প্লাটিনাম স্পন্সর ছিল ইভ্যালি সহযোগি প্রতিষ্ঠান ই-ফুড।


আরও সংবাদ   বিষয়:  ই-ক্যাব   ই-জিনিয়াস  




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close