কানের রেড কার্পেটে হাঁটা স্বপ্ন ছোঁয়ার মতো : আরিফিন শুভ
নিপু বড়ুয়া, কান, ফ্রান্স থেকে
|
![]() রেড কার্পেটে হাঁটার অনুভূতি- স্বপ্ন ছোঁয়ার মতো। আমার মাথায় একটা বিষয়ই ঘুরছিল, ১৭-১৮ বছর আগে ২৫৭ টাকা নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় আসা ছেলেটি কানের রেড কার্পেটে হাঁটছে। তার মানে আমার ওপর মানুষের ভালোবাসা, দোয়া এবং আস্থা আছে। বিষয়টি আমাকে অনুপ্রাণিত করছে আরও ভালো কাজ করার, যাতে ভবিষ্যতে আবারও কাজ নিয়ে এখানে আসতে পারি। বঙ্গবন্ধু চরিত্রে অভিনয় করার অভিজ্ঞতা- প্রথম সাড়ে তিন মাস মুম্বাইতে, তারপর দেড় মাস ঢাকায়, শেষের ১০ দিন আবার মুম্বাইতে। মুম্বাই, তারপর ঢাকা, তারপর আবার মুম্বাই- এই পুরো সময়টাতে আমাকে ভিন্ন একটা আবহের মধ্যে রাখা হয়েছে। যে হোটেলে ছিলাম সেখানে আমি ভিন্ন একটি ফ্লোরে ছিলাম। যেখানে অন্য কেউ ছিল না। সেই রুমে আমি বঙ্গবন্ধুর ছবি লাগিয়ে ছিলাম। সেখানেই আমার ভাবনাগুলো ছবির মধ্যে লিখে রাখতাম। প্রথমে শুটিং সেটে, সেখান থেকে ফিরে আবার রুমে সেই আবহের মধ্যেই ছিলাম। আমাকে বলা হয়েছিল, এই সময়টাতে কোনোভাবেই বের হতে পারব না। এমনকি কারও সঙ্গে আড্ডা মারা বা ঘুরতে যেতে পারব না। আমিও সেই আবহের বাইরে যেতে চাইনি। শুটিংয়ের পুরোটা সময় বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করার চেষ্টা করেছি। বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে বসবাসের যে চেষ্টা সেই কারণে আমার অন্য কিছু ভাববার সময় ছিল না। ‘মুজিব’-এর ট্রেলার নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা হচ্ছে। সে বিষয়ে আপনার মন্তব্য- একটা বিষয় পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমাদের এই ট্রেলার অফিসিয়াল নয়। সিনেমাটির এখনও পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। কানে ট্রেলার প্রকাশের জন্য মাত্র ১৩ দিনে ট্রেলারটি বানানো হয়েছে। ভিএফএক্সের জন্য সময় নেওয়া হয়েছে মাত্র ১০ দিন। ফলে কিছুটা ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে গেছে। যেহেতু বিশাল ক্যানভাসে কাজটা হচ্ছে, তাই পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ শেষ হতে এখনও দুই মাস সময় লাগবে। ডাবিংয়ে যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলোও ঠিক হয়ে যাবে। এরই মধ্যে আমরা অফিসিয়াল ট্রেলার প্রকাশের ব্যাপারে প্রস্তুতি নেব। একটা কথাই বলতে চাই, ট্রেলার শুধু ট্রেলার। পুরো সিনেমা দেখে মন্তব্য করবেন মাথা পেতে নেব। আপনি এখানে আসার পর সব কিছু ঘুরে ঘুরে দেখছেন। নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন অনেক দেশের প্যাভিলিয়ন থাকলেও বাংলাদেশের কোনো প্যাভিলিয়ন নেই- আগামী বছর থেকেই কান চলচ্চিত্র উৎসবে আমাদের দেশের প্যাভিলিয়ন থাকবে। বিষয়টি ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছেন আমাদের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। বাংলাদেশের প্যাভিলিয়নে থাকা মানে পুরো দেশের জন্য গর্বের। পুরো পৃথিবীর পাঁচটি বড় চলচ্চিত্র উৎসবের একটি কান। এখানে যদি আমাদের একটা প্যাভিলিয়ন থাকে তা হলে বাংলাদেশের ভালো কাজগুলো বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করার সুযোগ তৈরি হয়ে যাবে। শিল্পীরা আসবেন, নির্মাতা ও প্রযোজকরা আসবেন, সবার সঙ্গে কমিউনিকশনের একটা সুযোগ তৈরি হবে। এবার কান উৎসবে অনেক তরুণ নির্মাতা তাদের সিনেমা নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশের তরুণ নির্মাতাদের প্রতি কী মেসেজ দেবেন? পৃথিবীটাই এখন তরুণদের। তাদের প্রতি আমার একটাই পরামর্শ থাকবে ভালো ভালো কাজ নির্মাণ করুন। বিশ্বের সব চলচ্চিত্র উৎসবের খোঁজখবর রাখুন। যদি আপনাদের সিনেমাগুলো উৎসবগুলোতে পাঠাতে কোনো ধরনের সাহায্যের প্রয়োজন হয় তা হলে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তারা আপনাদের পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করবে আমার বিশ্বাস। |