হাতিয়ায় বাড়ছে ডায়রিয়া, শয্যা সঙ্কটে রোগীদের ভোগান্তি
জিল্লুর রহমান রাসেল, হাতিয়া (নোয়াখালী)
|
![]() সোমবার (২৩ মে) সরেজমিন দেখা যায়, ওয়ার্ডে ও ওয়ার্ডের বাইরের বারান্দায় রোগীর ভিড়। সিট না পাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা রোগীর স্বজনরাও পড়েছে বিপাকে। বারান্দায় ফ্যান না থাকায় একদিকে গরম অন্যদিকে মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসা নিতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা জাহাজমারা ইউনিয়নের বিরবিরি গ্রামের খতিজা খাতুন বলেন, আমার ছেলের বউকে ডাক্তার ভর্তি দিয়েছে কিন্তু কোনো সিট খালি নেই। পরে নিরুপায় হয়ে বারান্দায় বিছানা করে স্যালাইন লাগিয়েছি। চারপাশে গন্ধে এবং গরমে খুবই কষ্ট হচ্ছে। সঙ্গে পুরুষ কেউ না থাকায় নার্সদেরকে একবারের বেশি দুবার ডাকলে আসে না, বরং খারাপ আচরণ করে। সোনাদিয়া ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা আলতাফ হোসেন বলেন, গত কয়েক দিনে আমার মেয়ের পাতলা পায়খানা হচ্ছে। গ্রাম্য চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ, স্যালাইন খাওয়ানোর পরও কমছে না। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। সিট না পাওয়ায় বারান্দার মেঝেতে রেখে চিকিৎসা চালানো হচ্ছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দেওয়া তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহে ১২৮ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০ জন ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৫০টি হলেও প্রতিনিয়ত ভর্তি রোগী থাকে ৮০ থেকে ৯০ জন। সোনাদিয়া চৌরাস্তা বাজার এলাকার সানজিদা ফার্মেসির মালিক রাশেদ উদ্দিনসহ অনেক পল্লী চিকিৎসক জানান, কয়েক দিন ধরে প্রচুর খাবার স্যালাইন ও ডায়রিয়ার ওষুধ বিক্রি হচ্ছে। এই সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বেশি হওয়ায় আমরা রোগীর বাড়িতে গিয়ে স্যালাইন লাগিয়ে দিতে হচ্ছে। যাদের অবস্থা বেশি খারাপ তাদেরকে হাসপাতালে রেফার করছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, এখন গরম যত বাড়ছে, ডায়রিয়া রোগীও তত বাড়ছে। মানুষ তৃষ্ণা মেটাতে বাইরের বিভিন্ন ধরনের পানীয়সহ শরবত খাচ্ছে। এর ফলে তারা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীদের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে প্রতিনিয়ত ৮০-৯০ জন রোগী ভর্তি থাকে। আমরা আমাদের সাধ্যমতো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। তবে এটি ১০০ শয্যায় উন্নীত করার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগে কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় এমপিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি কয়েকজন সচিব এসে পরিদর্শন করে গেছেন। /আরএ
|