আত্মপ্রশংসা মানুষের যে ক্ষতির করে
সানজিদা কুররাতাইন
|
![]() নিজেকে কখনই দোষ-ত্রুটির ঊর্ধ্বে মনে না করা। আত্মপ্রশংসা এবং নিজেকে ত্রুটিমুক্ত মনে করা বৈধ নয়। ইহুদিরা নিজেদের পবিত্র বলে বর্ণনা করত। অধিকাংশ ক্ষেত্রে আত্মপ্রশংসার কারণ হয়ে থাকে অহমিকা ও আত্মগর্ব। কাজেই সদম্ভে আত্মপ্রশংসা ও আত্মপ্রচারে লিপ্ত হওয়া যাবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পর প্রশংসাচর্চা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা তা হচ্ছে নিজেকেই জবাই করা।’ (ইবনে মাজা : ৩৭৪৩)। অন্যত্র বলেছেন, ‘যখন তোমরা সামনে প্রশংসাকারীদের দেখতে পাও, তখন তাদের চেহারায় মাটি নিক্ষেপ কর।’ (মুসলিম : ৭৩৯৬)। আল্লাহর ভয় থাকলে আত্মপ্রচারে লিপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমরা আত্মপ্রশংসা কর না, তিনি ভালো জানেন, কে তাকওয়া অবলম্বন করেছে।’ (সুরা নাজম : ৩২) নিজেকে দোষ-ত্রুটিমুক্ত মনে করা বা প্রচার করা মিথ্যা ছাড়া কিছুই নয়। কেননা প্রতিটি মানুষের মাঝেই অসংখ্য ত্রুটি-বিচ্যুতি বিদ্যমান থাকে। এমনকি অন্য কেউ প্রশংসা করলেও তাতে খুশি না হওয়া। হজরত আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) এক ব্যক্তির প্রশংসা শুনতে পেলেন, সে অপর এক ব্যক্তির অতিরিক্ত প্রশংসা করছে। তিনি তাকে বললেন, তোমরা তো লোকটির মেরুদণ্ড ভেঙে দিলে! (অর্থাৎ তার সর্বনাশ করেছ!)।’ (বুখারি : ৬০৬০; মুসলিম : ৭৩৯৪)। হজরত আবু বাকরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজির (সা.) সামনে এক ব্যক্তি অপর এক ব্যক্তির প্রশংসা করল। তখন তিনি বললেন, ‘তোমার জন্য আফসোস! তুমি তো তোমার সাথীর গর্দান কেটে ফেললে!’ নবীজি (সা.) কথাটি কয়েকবার বললেন, এরপর বললেন, ‘তোমাদের কেউ যদি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রশংসা করতেই চায় তাহলে তার বলা উচিত- ‘অমুককে আমি এরকম মনে করি, তবে আল্লাহই তার সম্পর্কে অধিক জানেন।’ (বুখারি : ২৬৬২; মুসলিম : ৭৩৯১)। আল্লাহ সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। লেখক : শিক্ষার্থী, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা |