ই-পেপার শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪
শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে কোভিড সুনামির নেপথ্যে ডেলমিক্রন?
প্রকাশ: সোমবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:৪৩ এএম  (ভিজিট : ৩৯৯)
করোনার ওমিক্রন ধরন বিশ্বজুড়েই নতুন উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিশ্বের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা করোনার নতুন এই ধরনের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে এখনও বিস্তারিত জানেন না। ওমিক্রন ধরনের বৈশিষ্ট্য জানতে এবং এর বিস্তার ঠেকাতে গবেষণা চলমান। এর মধ্যেই ডেলমিক্রনকে আলোচনায় এনেছেন ভারতীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাদের একাংশের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপজুড়ে নতুন করে যে কোভিড সুনামি শুরু হয়েছে, তার নেপথ্যে রয়েছে ডেলমিক্রন। তবে বিশেষজ্ঞদের অপর অংশ ডেমিক্রনের অস্তিত্বই অস্বীকার করেছেন। তারা বলছেন, ওমিক্রনের দিকেই এখন মনোযোগ রাখা দরকার।

বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিশেষজ্ঞদের বলা ডেলমিক্রন করোনাভাইরাসের আলফা, বিটা কিংবা অন্য ধরনগুলোর মতো একেবারে নতুন কোনো ধরন নয়। মূলত করোনাভাইরাসের বিদ্যমান দুটি ধরন ডেল্টা ও ওমিক্রনেরই সমন্বিত রূপ এটি। 
ডেল্টা ও ওমিক্রন থেকে ডেলমিক্রন : চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত করোনার ডেল্টা ধরনের আধিপত্য দেখা গেছে। বিশ^জুড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জন্য এ ধরনই দায়ী বলে মনে করা হয়। করোনাভাইরাসের এ ধরনে আক্রান্ত হলে মারাত্মক উপসর্গ দেখা দেয়। আক্রান্ত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁকিও অনেক বেশি। সুস্থ হওয়ার পরও অনেকের স্মৃতিভ্রম, পেশিতে ব্যথা ও চুল পড়ে যাওয়ার মতো দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা দেখা দিতে পারে।

বিপরীতে ওমিক্রন ধরন নিয়ে ধারণা করা হচ্ছে, এর উপসর্গ মৃদু। এর সংক্রমণ ক্ষমতা অনেক বেশি হলেও মারাত্মক কোনো উপসর্গ দেখা দেয় না এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন কম হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বিদ্যমান টিকা নিয়ে এবং প্রাকৃতিকভাবে অর্জিত রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা দিয়ে ওমিক্রন ধরনকে ঠেকানো যায় না। ওমিক্রনের প্রাথমিক লক্ষণ হলো গলাব্যথা, মাথাব্যথা ও ক্লান্তিবোধ। তবে ওমিক্রনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের স্বাদ ও গন্ধ না পাওয়ার ঘটনা এখন পর্যন্ত দেখা যায়নি। ডেল্টা ও ওমিক্রন ধরনের সমন্বিত রূপ ডেলমিক্রনকে উচ্চ সংক্রমণ ক্ষমতার ধরন বলে মনে করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এর উপসর্গও মারাত্মক। 

ডেলমিক্রন নিয়ে ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন : ডেলমিক্রন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আরও অনেক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর সম্ভাব্য সাধারণ কিছু উপসর্গ হলো- উচ্চ তাপমাত্রা, ক্রমাগত কাশি, স্বাদ ও গন্ধ না পাওয়া কিংবা স্বাদ-গন্ধে পরিবর্তন আসা, মাথাব্যথা, সর্দি ও গলাব্যথা। হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে চিকিৎসকদের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, যেসব মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, যারা বয়স্ক ও জটিল রোগে ভুগছেন, তারা ডেল্টা ও ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকেন। যেসব এলাকায় টিকা নেওয়া মানুষের সংখ্যা কম, সেখানেও ডেল্টা ও ওমিক্রন ধরনের প্রকোপ দেখা দিতে পারে। তবে এই দুই ধরনের সমন্বিত রূপ ডেলমিক্রন শক্তিশালী ধরন হয়ে উঠবে কিনা, তা নিয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।

মডার্নার প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা পল বুর্টন মনে করছেন, কোনো ব্যক্তি একই সময়ে ডেল্টা ও ওমিক্রন ধরনে আক্রান্ত হলে নতুন শক্তিশালী ধরনের আবির্ভাব হতে পারে। যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমিটিকে তিনি বলেন, হতে পারে করোনার এ ধরন দুটি নিজেদের মধ্যে জিন অদলবদল করবে এবং অনেক বেশি বিপজ্জনক ধরন হিসেবে আবির্ভূত হবে। ডেইলি মেইলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বুর্টন বলেন, মহামারির শুরুর দিকের তথ্যসংবলিত কিছু নথি আবারও প্রকাশ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখানে দেখা গেছে, কম রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ নিশ্চিতভাবে ভাইরাসের দুটি ধরনেই আক্রান্ত হতে পারেন।

অন্য গবেষকরাও সতর্ক করেছেন, দুই ধরনের সমন্বয় হওয়ার ঘটনা খুবই বিরল। তবে পরিস্থিতি ভাইরাসের অনুকূলে থাকলে অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।

তবে ভারতের সেন্টার ফর কমিউনিটি মেডিসিনের সহযোগী অধ্যাপক হার্শাল আর সালভে বলছেন, ডেলমিক্রন বলে কোনো কিছুর অস্তিত্বই আসলে নাই। ‘ওমিক্রনও নতুন কোনো ভাইরাস নয়, একটি মিউটেড করোনাভাইরাস। এখন পর্যন্ত তথ্যপ্রমাণ হিসেবে যা পাওয়া গেছে, তাতে এর সংক্রমণ ক্ষমতা প্রবল তবে উপসর্গ মৃদু। সুতরাং ভয়ে মরে যাওয়ার কোনো কারণ নাই।’


আরও সংবাদ   বিষয়:  ডেলমিক্রন   যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ  




সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close