সুখের স্বপ্ন শেষ করুণ মৃত্যুতে, সৌদির সঙ্গে কার্যকর আলোচনার বিকল্প নেই
|
![]() ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচি প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, গত পাঁচ বছরে সৌদি আরবে মারা গেছেন ২০০ জন নারীকর্মী। তাদের বেশিরভাগেরই মৃত্যু সনদে উল্লেখ আছে আত্মহত্যা। গৃহকর্মীদের অধিকাংশই অভিযোগ করেছেন, সেখানে তাদের নিয়োগকর্তা এবং মক্তবের লোকজন বিভিন্ন ধরনের নির্যাতন করে। ফেরত আসা নারীরা শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নির্যাতন, ঠিকমতো খাবার না পাওয়া, চুক্তি অনুযায়ী নিয়মিত বেতন না পাওয়া এবং নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজে নিয়োজিত থাকাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন। বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২১২ জন নারীকর্মী সৌদি গেছেন। বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম বলেন, সৌদিতে যাওয়া নারীকর্মীদের সুরক্ষায় দেশে আইন আছে। কিন্তু সৌদিতে নারীকর্মী পাঠানো হয় সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে, দেশটির সঙ্গে কোনো চুক্তি নেই। ফলে সৌদি আইনে নারীকর্মীরা নির্যাতনের বিচার চাইতে পারেন না। আবার দেশে যে আইন আছে তার প্রকৃত বাস্তবায়ন নেই। সৌদি আরবে গৃহকর্মীদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালানো ও ন্যায্য বেতন থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু সম্প্রতি শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে। একদিকে যেমন নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনা বেড়েছে, তেমনি অপমান-নির্যাতন সইতে না পেরে ঘটেছে আত্মহত্যার ঘটনাও। আমরা মনে করি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে নারীকর্মীদের বিদেশ গমন অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও তাদের শারীরিক-মানসিক নিরাপত্তার বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ। সৌদিতে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন নারীকর্মীরা। বিষয়টি মানবিকতা ও মর্যাদার প্রশ্নে অবশ্যই মানবতাবিরোধী। আমাদের দূতাবাস এ ব্যাপারে যথাযথ দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারছে না। নারীদের এমন দুরবস্থার দায় সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা এড়াতে পারেন না। আমাদের প্রত্যাশা, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। আমাদের দেশের প্রবাসীদের মধ্যে সৌদিতে কর্মরত মানুষের সংখ্যা বেশি। মূলত এসব প্রবাসী কর্মজীবীর পাঠানো অর্থ দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে। অথচ সৌদি থেকে নিঃস্ব এবং লাশ হয়ে ফিরছেন নারীকর্মীরা। এই ফেরার সংখ্যা বর্তমানে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সৌদির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে কার্যকর আলোচনা করা জরুরি। এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে হেলাফেলার কোনো সুযোগ নেই। |