প্রেমের বলি মারুফা স্বামীর হাতেই খুন
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
|
![]() কয়েক দিন পর নিজের ভুল বুঝতে পারে মারুফা। মা-বাবাকে জানায় সে আর সংসার করবে না। লেখাপড়া চালিয়ে যাবে। গত শুক্রবার দুপুরে মারুফার স্বামী ইমন মিয়া মারুফাদের বাড়িতে বেড়াতে যায়। সবাই ভালোভাবে গ্রহণ করে তাকে। এ সময় সে জানায় যে, সে মারুফাকে নিতে এসেছে, কিন্তু মারুফা নারাজ ছিল। নানাভাবে বোঝানোর এক পর্যায়ে পরদিন (শনিবার) স্বামীর সঙ্গে যেতে রাজি হয়। স্বামী সেদিন শ্বশুরবাড়িতেই থেকে যায়। এলাকায় লেখাপড়ার সুযোগ কম থাকায় মারুফাকে ছোটকালেই পাশের শ্রীপুর উপজেলার বরমী বরনল গ্রামের নানা কাশেম মিয়ার কাছে দিয়ে দেন তার পরিবার। রাতে তারা একসঙ্গে ঘুমাতে যায়। রাত ২টার দিকে মারুফার স্বামীর ফোন দেখে হঠাৎ ঘুম থেকে জেগে ওঠেন বাবা মাসুদ। অন্যপ্রান্ত থেকে তার মেয়ের জামাই জানায়, মারুফাকে খুন করে সে চলে এসেছে। পরে বাড়ির একটি কক্ষে গিয়ে তারা মারুফার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ইমন মিয়াকে শনিবার দুপুরে শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে শ্রীপুরের বরনল গ্রামের এমদাদুল হকের ছেলে। তার বিরুদ্ধে কাপাসিয়া জেলার বড়বেড় গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। মারুফা আক্তার (১৬) কাপাসিয়ার বড়বেড় গ্রামের মাসুদ মিয়ার মেয়ে। মারুফার বাবা মাসুদ মিয়া বলেন, মেয়ে অনেক স্বপ্ন নিয়ে ভালো লেখাপড়া করতে নানাবাড়িতে পাঠিয়েছিলাম। সে লেখাপড়ায় ভালো ছিল। হঠাৎ না বুঝে সে প্রেমে জড়িয়ে বিয়ে করে শ^শুরবাড়িতে আশ্রয় নেয়। আমরা এমন বিয়ে মেনে নেয়নি। কয়েক মাস পর থেকেই তার মেয়ের ওপর নির্যাতন শুরু করে তার শ^শুরবাড়ির লোকজন। এক পর্যায়ে তাকে বাড়ি ছাড়া করা হয়। পরে মেয়েকে আমরা ঘরে ফিরিয়ে আনি। এটুকু বয়সেই তার মেয়েকে গত কয়েক মাস ধরেই মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। এতসব কাটিয়ে তার মেয়ে আবারও একটি স্বপ্ন দেখতে চেয়েছিল। সে চেয়েছিল ভালো লেখাপড়া করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে। সে সুযোগটিও দিল না তার স্বামী। জামাই বাড়িতে আসায় সবাই তাকে ভালোভাবে গ্রহণ করেছি। আমরা খুব যত্ন করেছি, তার মেয়েও ভালো ব্যবহার করেছে। কিন্তু তার বাড়িতে এভাবে পাশের রুমে সে মেয়েকে হত্যা করে চলে যাবে তারা তা আন্দাজও করতে পারেননি। কাপাসিয়া থানার ওসি এএফএম নাসিম বলেন, এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে শ্রীপুর থেকে অভিযুক্তকে আটক করে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধ করে কিশোরীকে হত্যা করা হয়। এদিকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন। |