জাতীয় দলে ফুটবলাররা কতদিন বেতনহীন থাকবেন!
আসমাউল মুত্তাকিন
|
![]() জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবির) কেন্দ্রীয় চুক্তি আছে। মাস গেলে মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক পান বিসিবির ‘তালিকাভুক্ত’ ক্রিকেটাররা। কিন্তু এর ঠিক উল্টো বাংলাদেশে ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। নেই জাতীয় দলের ফুটবলারদের সঙ্গে কোনো কেন্দ্রীয় চুক্তি। দেশের বিভিন্ন ক্লাবের অধীনে খেলে পারিশ্রমিক বাবদ পাওয়া অর্থ আর ম্যাচ ফিই তাদের সম্বল। ক্যাম্প চলাকালীন ম্যাচ ফি নিয়ে রয়েছে নানা ধরনের বিতর্ক। যা নিয়ে বাইরে কথা বলতে চান না ফুটবলাররা। তাই বলা যায় লাল-সবুজ জার্সিকে ভালোবেসে খেলোয়াড়রা ‘বেতনহীন’ ভাবে খেলেন জাতীয় দলে। তবে এর ঠিক বিপরীত চিত্র জাতীয় দলের কোচ, কোচিং স্টাফ কর্মকর্তার বেলায়। মাস গেলে মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক পান তারা। অথচ যারা জাতীয় দলের মূল প্রাণ তারাই থাকেন ‘বেতনহীন’। এ বছরে জানুয়ারিতে ফেডারেশন কাপ চলাকালীন জাতীয় দলের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া বলেছিলেন, ‘ক্লাবে খেলতে ভালো লাগে কারণ ক্লাব তাদের পারিশ্রমিক দেয়। দিনশেষে আর্থিক নিরাপত্তার একটা বিষয় তো আছে।’ এ ছাড়া ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি থাকলে অনেক সময় ক্লাবগুলো ছাড়তে চায় না তাদের ফুটবলারদের। এটা থেকে বের হয়ে আসার জন্য নতুন পরিকল্পনাও নিয়েছিল বাফুফে। এ বছরের জুনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘ক্লাবগুলোর সঙ্গে ফুটবলারদের জাতীয় দলে খেলা নিয়ে অনেক সমস্যা হয়। তখন আমি চিন্তা করলাম, বাফুফে মেম্বারদের সঙ্গে কথা বললাম, পারিশ্রমিক পদ্ধতি দাঁড় করাতে হবে। ওরা ক্লাব থেকে যেটা পায়, পাক, কিন্তু জাতীয় দলে খেলার জন্য ওদের যদি একটা পারিশ্রমিক দেই, তা হলে ওরা অনুপ্রাণিত এবং এটা শিঘ্রই হবে।’ প্রাথমিক পরিকল্পনায় ৩০ জন ফুটবলারকে তিনটি কাঠামোতে বেতন দেওয়ার কথা হয়। প্রথম ১৫ জন থাকবে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে। পরের ১০ জন ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ও শেষ ৫ জন ‘সি’ ক্যাটাগরিতে। পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে ক্যাটাগরি পরিবর্তন হবে। এরপর দীর্ঘ ছয় মাস অতিক্রম হয়ে গেলেও বিষয়টি বাফুফে কর্তাদের আশ্বাসের মধ্যেই আটকে আছে। সভাপতির মতো আবারও খেলোয়াড়দের বেতন নিয়ে আশার বাণী শোনালেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। তিনি সময়ের আলোকে বলেন, ‘এটা বিশেষ প্রক্রিয়া। আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বিষয়ে কথা বলেছি। তিনি আমাদের বিষয়ে ইতিবাচক। তবে একটু সময় লাগবে। চলতি বছরে এটা হচ্ছে না। তা ছাড়াও বাফুফের ফান্ডে একটু সমস্যা আছে। তবে আগামী বছর জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারিতে তাদের বেতন আওতাভুক্ত হবে বলে আশা করছি।’ বেতনের কথা শুনে স্বাভাবিকভাবেই খুশি ফুটবলাররা। এ বিষয়ে জাতীয় দলে গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা সময়ের আলোকে বলেন, ‘গত জুনে আমাদের কয়েকজন ফুটবলারকে ডেকে মিটিং করেছিলেন বাফুফে সভাপতি। সেখানে তিনি আমাদের বেতনের কথা বলেছিলেন। পরে এ বিষয়ে কিছু জানি না। আর এটা কবে হবে সেটাও জানি না। তবে বেতন কাঠামো থাকলে এটা অবশ্যই একজন খেলোয়াড়দের জন্য ভালো দিক। তখন খেলোয়াড়দের মধ্যেই দায়িত্ব কাজ করবে। তখন তারা মনে করবে যে জাতীয় দলে খেললে পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। এটা সব ফুটবলারের জন্যই ইতিবাচক হবে।’ বেতন কাঠামোর আওতায় আনার পরিকল্পনাটা খুবই ভালো মন্তুব্য করে জাতীয় দলে খেলোয়াড় সোহেল রানা বলেন, ‘এতে খেলোয়াড়দের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়বে। সবাই ভালো করার চেষ্টা করবে। এটা খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করবে।’ এফএইচ |