সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক, মিথ্যা ও গুজব ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে আটক রাজধানীর বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক রুমা সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বিষয়টি সময়ের আলোকে নিশ্চিত করেছেন র্যাব- ৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিনা রাণী দাস।
তিনি বলেন, সহকারী অধ্যাপক রুমা সরকারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং ৩৪।
এর আগে, বুধবার সকালে রাজধানীর বেইলি রোডের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করে র্যাব।
সম্প্রতি কুমিল্লার পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার ঘটনায় বেশকয়েক জেলায় সহিংসতা হয়। এই ঘটনায় পাশ্ববর্তী দেশ থেকে ১৯ অক্টোবর একটি ভিডিও ছড়ানো হয়। ভিডিওটি জমিজমা বিরোধে গত ১৬ মে রাজধানীর পল্লবীতে দুর্বৃত্তদের হাতে মো. সাহিনুদ্দিন হত্যার। সেসময় কেউ একজন তা ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছিলেন। ঘটনার পরই আইনশৃঙ্খলাবাহিনী হত্যায় অভিযুক্ত প্রায় সকল আসামিকেই গ্রেফতার করে।
পরবর্তীতে ভিডিওটি 'নোয়াখালীর হিন্দু মহাজোট কর্মী যতন শাহ হত্যাকাণ্ডের' ভিডিও বলে গুজব ছড়ানো হয়। যা কোলকাতা থেকে দেবদৃতা ভৌমিক নামক একজন ভারতীয় নাগরিক সর্বপ্রথম ফেসবুক মেসেঞ্জারে ছড়িয়ে দেন। তাছাড়া দেবদাস মন্ডল নামে আরও এক ব্যক্তি কোলকাতা থেকেই টুইটারে ভিডিওটি আপলোড দেন। ভিডিওর ক্যাপশনে দেবদাস লিখেছিলেন, ‘বাংলাদেশের নোয়াখালীর পূজা মণ্ডপে হিন্দু মহাজোট কর্মী যতন সাহা হত্যার ভিডিও ফুটেজ। দোষীদের এখনো গ্রেফতার করা হইতেছে না কেন?’
রুমা সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এই ভিডিও ফেসবুকে শেয়ার দেন। পরবর্তীতে ফেসবুক লাইভে এসে রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কথা বলেন এবং উস্কানিমূলক তথ্য ছড়ান। এতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে পারে আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় র্যাব তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়।
এদিকে বুধবার দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদরদপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, 'সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের জন্য একটি চক্র দেশে-বিদেশে অপপ্রয়াস চালিয়েছে। ইতিমধ্যে র্যাবের সাইবার ইউনিট বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি শনাক্ত করেছে। যারা দেশের বাইরে থেকে গুজব ছড়াচ্ছে তাদেরকে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যেই হোক তার বিরুদ্ধে র্যাব ব্যবস্থা নেবে।'
অন্যদিকে কুমিল্লার নানুয়ার দিঘির পাড়ে পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন শরিফ রাখায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে এক যুবককে শনাক্ত করা হয়েছে। তার নাম ইকবাল হোসেন। তাকে গ্রেফতারে গত কয়েকদিন ধরে তৎপর পুলিশ প্রশাসন। এছাড়া ইকবালের সহযোগী হিসেবে অন্তত চারজনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে