ই-পেপার রোববার ১৯ মে ২০২৪
রোববার ১৯ মে ২০২৪

এরশাদের গঠিত উপজেলার নির্বাচনে নেই জাপা
প্রকাশ: বুধবার, ৮ মে, ২০২৪, ২:১৫ এএম আপডেট: ০৮.০৫.২০২৪ ৮:১৭ এএম  (ভিজিট : ২২৯)
সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) হাতেগোনা কয়েকজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আজকের উপজেলা নির্বাচনে। তারাও মাঠে নীরব। অথচ এই উপজেলা পরিষদ গঠিত হয়েছিল সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের শাসনামলে। তাদের দলের এই অবস্থাকে ‘করুণ দশা’ বলে অভিহিত করছেন খোদ জাপার সিনিয়র নেতারাই। এর পেছনে তারা দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা, জাতীয় নির্বাচনে বিপর্যয় ও কেন্দ্রের প্রতি তৃণমূলের আস্থাহীনতাকে সামনে আনছেন। বেশিরভাগই দলের শীর্ষনেতাদের দোষারোপ করছেন।

অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও নানা তালবাহানায় দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয় জাতীয় পার্টি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাপা ২৬ আসনে সমঝোতা করলেও ১১টিতে জয় পায়। ১১টি আসন পেয়ে সংসদের বিরোধী দলের আসনে বসেছে। ২৬ আসনের মধ্যে ৯টি আসনে জামানতও হারাতে হয়েছিল জাপার প্রার্থীদের। লাঙ্গলে ভোট পড়ে মাত্র ৪ শতাংশ। যা ইতিহাসে সর্বনিম্ন। ছাড়ের বাইরে ২৩৯টি আসনের মধ্যে ২৩৫টিতেই জামানত হারান লাঙ্গলের প্রার্থীরা। এরপর মার্চে হওয়া দুই সিটি করপোরেশন, ৯টি পৌরসভা এবং ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোট হয়। এর মাত্র দুটিতে প্রার্থী দিতে পেরেছিল জাপা। সেখানেও জামানত রক্ষা করতে পারেননি তারা। অথচ বিগত উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে সাড়ে ৪শ’ উপজেলায় লাঙ্গল মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল। সে নির্বাচনে রংপুরের পীরগাছা ও দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ উপজেলায় ২ জন উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। অথচ এবারের উপজেলা নির্বাচনে সেই জাপার প্রার্থীই নেই। 

প্রথম ধাপের ভোটে দলের কতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন; সেই তথ্যও জানাতে পারেননি খোদ জাতীয় পার্টির যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম। 

তিনি সময়ের আলোকে বলেন, আমি বিষয়টি ঠিক বলতে পারব না। আছেন হয়তো কয়েকজন। নির্বাচনের পর ভেঙে যাওয়া দলের আরেকটি অংশেরও (রওশন এরশাদ) নেই কোনো প্রার্থী। যদিও তারা এখনও দলকে গুছিয়ে উঠতে পারেননি। আওয়ামী লীগ বিএনপি উপজেলা নির্বাচন নিয়ে পাল্টাপাল্টি কথা বললেও চুপ বিরোধী দলের নেতা ও জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরাবরই নির্বাচন নিয়ে দ্বিচারী আচরণের কারণে দিন দিন জনপ্রিয়তা কমছে জাতীয় পার্টির। তৃণমূলে অবস্থা নাজুক। একসময় রংপুরে জাপার শক্তিমত্তা থাকলেও এখন চিড় ধরেছে। সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। অর্থ নষ্ট করে আবার উপজেলা নির্বাচন করার ক্ষেত্রে অনীহা রয়েছে তৃণমূল নেতাদের মধ্যে। দল থেকেও নির্বাচনে কোনো অর্থ সহযোগিতা পান না বলে অভিযোগ আছে নেতাকর্মীদের। গেল জাতীয় নির্বাচনে সেই অভিযোগ প্রকট ছিল। 

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার দলীয় কর্মী মোবারক হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে তাদের উপজেলায় জাপার কোনো প্রার্থী নেই। একসময় তাদের উপজেলায় জাতীয় পার্টির ব্যাপক জনসমর্থন ছিল। বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিও ছিলেন। কিন্তু এখন আর সেই সুদিন নেই। দলের নেতারা অন্য দলে যোগ দিচ্ছেন। জাতীয় পার্টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মনেও আগ্রহ নেই। দুয়েকজন আছে ব্যক্তি জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকেন। 

জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম সময়ের আলোকে বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠাতার হাত ধরেই উপজেলা পরিষদ গঠিত হলো; সেই নির্বাচনেই আমরা নিষ্ক্রিয়। এটা আমাদের জন্য বিব্রতকর অবস্থা। উপজেলা নির্বাচন বর্জনের বিষয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু এই নির্বাচন দলীয় প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ চালু করেছিলেন বলে তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে জাপা নির্বাচনে থাকছে। দলের প্রতি তৃণমূল নেতাকর্মীদের ব্যাপক অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এর পেছনে গত জাতীয় নির্বাচনে বিপর্যয় বড় কারণ। নেতাকর্মীদের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। তারা শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিশ্বাস করতে পারছেন না। ভোট নিয়ে আগ্রহে ভাটা পড়েছে। ওই নির্বাচন ইস্যুতে দল ভেঙে যায়। সাংগঠনিক অবস্থা খুবই নড়বড়ে হয়ে পড়ে। এখন দল চাঙ্গা করতে সময় লাগবে। 

তিনি বলেন, প্রথম ধাপের নির্বাচনে তাদের ৮-১০ জন প্রার্থী ভোট করছেন। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সামনের ধাপেও একই চিত্র থাকবে। এ নিয়ে দলীয় ফোরামে আলোচনা হয়েছে। দলের সাংগঠনিক অবস্থা মজবুত করতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

যদিও দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেছেন, ভোট সুষ্ঠু হওয়ার গ্যারান্টি না পাওয়ায় আমাদের ভালো প্রার্থীরা এগিয়ে আসছেন না। আমরা তো সুষ্ঠু ভোটের গ্যারান্টি দিতে পারছি না। জাতীয় নির্বাচনের চিত্র তা-ই বলে দিচ্ছে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ


https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close