ই-পেপার রোববার ১৯ মে ২০২৪
রোববার ১৯ মে ২০২৪

রাতুলের বিড়ম্বনা
প্রকাশ: শনিবার, ৪ মে, ২০২৪, ২:০৮ এএম  (ভিজিট : ৫৫০)
রাতুল বরই বিচি গিলে ফেলেছে। এখন তার কী হবে? তার মাথা ফুঁড়ে একটা মস্ত বড় বরই গাছ যদি গজায়? যদি সেই গাছের শেকড় মাটির গভীরে ছড়িয়ে পড়ে? যদি সে আর বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে না পারে? রাতুলের সঙ্গে এটা কী হয়ে গেল। বড্ড চিন্তায় পড়ে গেল রাতুল। গতকাল রাতেই দাদি তার কিচ্ছায় এমন একটা গল্প বলেছে। 
গল্পটা ছিল এমন-এক দেশে একটা দৈত্য ছিল। সেই দৈত্য ছিল খুব দুষ্টু। ক্ষতি করার জন্য সারাক্ষণ সবার পেছনে লেগে থাকত। ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারত না। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে ভয় পেত। বিকালে কেউ খেলার মাঠে যেত না। একদিন এক কৃষকের ছোট্ট মেয়ে বুদ্ধি করে দৈত্যটাকে কৌশলে তেঁতুলের বিচি খাওয়ায়। তারপর সেই দৈত্য আর কই যায়? কিছু সময়ের মধ্যেই সেই দৈত্যের মাথা ফুঁড়ে একটা বিশাল আকৃতির তেঁতুল গাছ বের হয়ে আসে। মাটির গভীরে তার শেকড় ছড়িয়ে গাছটা শক্তভাবে মাটিতে দাঁড়িয়ে যায়। দৈত্যও মাটিতে আটকে গেল। তারপর আর সেই দৈত্য কারও ক্ষতি করতে পারেনি। সেই তেঁতুল গাছে এখন অনেক তেঁতুল হয়। সেই গাছের তেঁতুলগুলো টক হয় না; অনেকটা মিষ্টি মিষ্টি স্বাদের।
রাতুল বরই বিচি গিলার কথা কাউকে বলতেও পারছে না। মন খারাপ করে বাড়ির পেছনে পেয়ারা গাছের তলে সে বসে আছে। ছলছল চোখে সে দেখছে একটা কাঠবিড়ালি পেয়ারা খাচ্ছে। পাকা পেয়ারা। অন্যদিন হলে সে কাঠবিড়ালিকে তাড়িয়ে দিত। কিন্তু আজ সে দেবে না। কাঠবিড়ালিও তো পেয়ারার বিচি খাচ্ছে। পেয়ারার ভেতর অনেক বিচি থাকে। তা হলে তো কাঠবিড়ালিরও মাথা ফুঁড়ে অনেকগুলো পেয়ারা গাছ হবে। এমন ভাবনা থেকেই কাঠবিড়ালিকে সে আজ তাড়াচ্ছে না।
এদিকে দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেছে। রাতুল এখনও গোসল করেনি। দুপুরের খাবারও খায়নি। এমন তো কখনো হয় না। রাতুলকে খুঁজতে খুঁজতে তার দাদিবাড়ির পেছনের পেয়ারা গাছের তলায় এসে তার খোঁজ পেল। রাতুল দাদিকে দেখেই জড়িয়ে ধরে কেঁদে দিল। 
দাদি, এখন আমার কী হবে গো? কিছুক্ষণের মধ্যেই আমি তো গাছ হয়ে যাবো।
কী হয়েছে, দাদাভাই? এমনটা বলছো কেন?
আমি তো বরই বিচি গিলে ফেলেছি, দাদি।
 তো কী হয়েছে? বরই বিচি খেলে কী হয়?
 কেন? গতকাল তুমিই তো কিচ্ছায় বলল-এক দৈত্য তেঁতুলের বিচি খেয়ে বিশাল তেঁতুল গাছ হয়ে গেছে! 
হুম। তা তো বলেছি-ই। 
তা হলে?
দৈত্যটা খুব শয়তান ছিল। সবসময় মানুষের ক্ষতি করতে চাইত। ছোটদের ভয় দেখাত। খারাপ মানুষ ফলের বিচি খাইলে তার মাথা ফুঁড়ে গাছ গজায়। একদম মাটিতে দাঁড়িয়ে যায়।
তাই? খারাপ মানুষের হয়! 
হুম। তুমি তো অনেক লক্ষ্মী দাদাভাই আমার। তুমি তো খারাপ মানুষ না। তাই তোমার মাথা ফুঁড়ে গাছ বেরোবে না।
কথাটা শুনেই রাতুলের মুখে হাসি ফুটল। গাছ হওয়ার ভয়টা কেটে গেল। তাই সে দাদির সঙ্গে নাচতে নাচতে বাড়ির দিকে হাঁটতে লাগল। এখন তার প্রচণ্ড খিদে পেয়েছে।

সময়ের আলো/আরএস/ 




https://www.shomoyeralo.com/ad/1698385080Google-News-Update.jpg

সর্বশেষ সংবাদ

সর্বাধিক পঠিত


ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: কমলেশ রায়, আমিন মোহাম্মদ মিডিয়া কমিউনিকেশন লিমিটেড এর পক্ষে প্রকাশক গাজী আহমেদ উল্লাহ
নাসির ট্রেড সেন্টার, ৮৯, বীর উত্তম সি আর দত্ত সড়ক (সোনারগাঁও রোড), বাংলামোটর, ঢাকা।

ফোন : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৬৮-৭৪, ফ্যাক্স : +৮৮-০২-৯৬৩২৩৭৫ | ই-মেইল : shomoyeralo@gmail.com
close